নোটিশ:
শিরোনামঃ
সরকারপ্রধান হিসেবে প্রথমবার চট্টগ্রাম যাচ্ছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমিরাতকে ১৪০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন যুক্তরাষ্ট্রের জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পেতে আপিলের শুনানি শুরু টেকনাফে আরাকান আর্মির হামলা: দুইজন গুলিবিদ্ধ, তিনজনকে ধরে নিয়ে গেল বিদ্রোহীরা যুদ্ধ বলিউড সিনেমা নয়, বাস্তবের বিভীষিকা— সাবেক ভারতীয় সেনাপ্রধান অভিযোগ করতে গিয়ে হাজতে! গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা ঈদকে সামনে রেখে আগামী দুই শনিবার খোলা থাকবে শেয়ারবাজার বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির অভিযোগ: ১৭২ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তথ্য চেয়েছে দুদক নিষিদ্ধ সংগঠন ঘোষণা আজ, আওয়ামী লীগের পক্ষে অনলাইনে সক্রিয় থাকলেই শাস্তি চীন-পাকিস্তান-আফগানিস্তান: এক টেবিলে বন্ধুত্ব ও নিরাপত্তা

সালাতুল ইস্তিসকার আয়োজন করলে চাপ আসত ভারত থেকে

এ বি যুবাইর
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১০৯ বার দেখা হয়েছে
সালাতুল ইস্তিসকার আয়োজন করলে চাপ আসত ভারত থেকে

“তুমি তো বেয়াদব আছো বেশ! তুমি বুঝো এটা নিয়ে কত ঝামেলা হচ্ছে? ভারত থেকে চাপ আসছে তোমাদের এই পাগলামির জন্য! ঢাবিকে তোমরা মৌলবাদী বানায়ে ফেলতেছো দিন দিন! এর আগেও তোমরা বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত করছো।”

 
ইদানীং গরম পড়ছে বেশ।

হাসিনার আমলের একটা ঘটনা মনে পড়ছে—

গতবছর এমন দিনেও প্রচন্ড গরম পড়ছিলো, বিভিন্ন জায়গায় মানুষজন বৃষ্টির আশায় সালাতুল ইসতিসকা আদায় করছিলেন। আমরাও চেয়েছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা সালাতুল ইসতিশকা আদায়ের ব্যবস্থা করতে। আয়োজনও করেছিলাম। ইমামতি করার জন্য দাওয়াত দিয়েছিলাম প্রফেসর মুখতার আহমেদ স্যারকে৷ সবকিছু ঠিকঠাক। হঠাৎ আগের দিন রাত ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে তলব পড়ে আমার।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ইমাউল হক টিটু ফোন দিয়েছেন। “তোমাকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে এখন”। বললাম স্যার আমি তো হলে থাকি না। এতো রাতে কিভাবে আসবো? বললেন “যেখানেই থাকো, ক্যাম্পাসে আসো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাবে তোমার সাথে কথা বলবো আমি”। কি আর করার! বন্ধু আবদুর রহমান, মাহমুদ, শেখ তাওহীদ সহ কয়েকজনকে নিয়ে গেলাম ক্লাবে৷ গিয়ে দেখি তিনি সহ আরো ৬-৭ জন বসে আছেন আমাদের অপেক্ষায়। সবাইই সহকারী প্রক্টর বিভিন্ন জোনের৷

 

যেতেই জেরা শুরু করলো। আমি কোন সংগঠনের? কার কথায় এসব করছি, কে আমাদের দিয়ে করাচ্ছে এইসব প্রশ্ন। বললাম স্যার আমরা ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরাই আয়োজন করছি। কোনো সংগঠন থেকে না। আর কেউ করাচ্ছেও না আমাদের দিয়ে।

 

আমার সামনেই আমার ডিপার্ট্মেন্টের চেয়ারম্যান স্যারকে ফোন দিলেন৷ “আপনার স্টুডেন্ট এসব করছে আপনি জানেন?” স্যারকেও রীতিমতো ধমক দিচ্ছিলেন! “নিন, ওর সাথে কথা বলেন। এসব বন্ধ করতে বলেন এক্ষুনি”। স্যার বাধ্য হয়ে আমাকে বললেন, “আমার কিছু করার নেই যুবায়ের। বন্ধ করতে হবে বাবা!”

 

ফোন রেখে দিলো। তাদেরকে রিকোয়েস্ট করলাম স্যার, সবকিছু আয়োজন করে ফেলেছি। সবাইকে দাওয়াতও দিয়ে দিয়েছি। এখন হঠাৎ বাদ দেই কিভাবে?

 

বললো, “ঠিক আছে তাহলে কোনো একটা মসজিদে গিয়ে কর। পাবলিক প্লেসে খোলা জায়গায় করতে পারবা না। অল্প কয়েকজন নিয়ে মসজিদে গিয়ে পড়ে আসো”। বললাম স্যার এই নামাজ তো খোলা জায়গায়-ই আদায় করতে হয়, এটাই নিয়ম। “না, বাইরে অনেক রোদ, অনেক গরম। এর মধ্যে নামাজ পড়লে শিক্ষার্থীরা হিটস্ট্রোক করবে।” বললাম স্যার এই নামাজটা পড়াই হয় গরম থেকে বাঁচতে। যাতে আল্লাহ রহমতের বৃষ্টি দান করেন।

 

“তুমি তো বেয়াদব আছো বেশ! তুমি বুঝো এটা নিয়ে কত ঝামেলা হচ্ছে? ভারত থেকে চাপ আসছে তোমাদের এই পাগলামির জন্য! ঢাবিকে তোমরা মৌলবাদী বানায়ে ফেলতেছো দিন দিন! এর আগেও তোমরা বটতলায় কোরআন তেলাওয়াত করছো। ওইটা নিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়েছে আমাদেরকে। এতো দুঃসাহস কেন তোমার? তোমার জন্য এসব চাপ আমরা নিতে পারবো না। ভালোয় ভালোয় পড়াশোনা শেষ করে ভার্সিটি লাইফ শেষ কর। বহিষ্কার করে দিলে কিন্তু কিছু বলতে পারবা না! না মানে না। এটাই আমার শেষ কথা। এরপরও যদি কিছু করতে চাও আমি পুলিশ ডেকে পে’টাবো তোমাকে। দেখি তুমি কী করতে পারো! কর তোমার যা খুশি”

 

এরপর আমাদের সবার আইডি কার্ডের ছবি তুলে রাখলেন। বাড়ির ঠিকানা, পিতামাতার তথ্য সহ সবকিছু লিখে রাখলেন। আমরা বের হয়ে আসি।

 

পকেট থেকে ফোন বের করে দেখি এক সিনিয়র ভাই ফোন দিয়েছেন কয়েকবার। উনি ছাত্রলীগের পোস্টেড নেতা ছিলেন। কিন্তু কোন এক কারণে আমার সাথে ভালো সম্পর্ক ছিলো। স্নেহ করতেন আমাকে। ফোন ব্যাক করলাম।

 

“যুবায়ের কই তুই?” ক্যাম্পাসে আছি ভাই। “তুই এক্ষুনি ক্যাম্পাস ছাড়। কয়েকদিন এদিকে আসিস না আর। ঝামেলা হইসে।”

 

বললাম কী ঝামেলা ভাই?

 

“ইনান (ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) ভাই তোরে খুঁজতেছে। কয়েকজনের কাছে খোঁজ করছে তোর ব্যাপারে৷ তুই নাকি কিসের নামাজ আদায়ের আয়োজন করতেছোস? তোর হলে, ডিপার্ট্মেন্টে লোক পাঠাইসে। সরে যা কোথাও। দূরে থাক কয়েকদিন।”

 

ওনার কথামতো চলে গেলাম ক্যাম্পাস ছেড়ে। যেই বাসায় থাকতাম সেখানে না, আরেক বন্ধুর বাসায়। ক্যাম্পাসে আর ঢুকতে পারিনি কয়েকদিন। ইনানও আর পায়নি। পেলে হয়তো খারাপ কিছু হতে পারতো৷ যাইহোক, আল্লাহ সেফ করেছেন। তবে সালাতুল ইসতিশকা আর আদায় করতে পারলাম না।

 

কেমন সব দিন ছিলো আমাদের!!

 

সুত্র: এ বি যুবাইরের ফেসবুক পোস্ট

সমন্বয়ক, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন

 

আরও পড়ুন: ঐক্যের পথে শীর্ষ ইসলামী দলগুলো

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT