২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করলে কিছু মহল এই বিজয় মেনে নিতে পারেনি। সেসময় থেকেই বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ ও জঙ্গি-সমর্থক হিসেবে তুলে ধরতে অপপ্রচার চালানো শুরু হয়। এই প্রচারণায় সবচেয়ে সক্রিয় ছিল প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার। তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে বিএনপির বিরুদ্ধে ভুয়া দুর্নীতির গল্প ছড়ায়।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রথম আলো এক হাজারেরও বেশি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যার অনেকগুলো পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। বিশেষ করে বিভিন্ন প্রকল্প, নিয়োগ ও অর্থনৈতিক খাতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তারা যেসব সংবাদ পরিবেশন করেছে, সেগুলোর কোনোটিই আইনি তদন্তে টিকেনি। তবুও পত্রিকাটি কোনো সময় ভুল স্বীকার করেনি বা দুঃখ প্রকাশ করেনি।
এছাড়া লুৎফুজ্জামান বাবর, তারেক রহমানসহ অনেক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে রিমান্ডে কথিত স্বীকারোক্তির খবর ছেপেছে, যেগুলো বাস্তবে আদালতের কোনো নথিতে নেই। রিমান্ডে জবানবন্দি প্রকাশ করাও আইনত অপরাধ। অথচ এমন অপরাধ করেও প্রথম আলো পার পেয়ে গেছে।
জঙ্গিবাদ নিয়ে গঠিত মিথ্যা বয়ানও প্রথম আলোর একটি প্রধান হাতিয়ার ছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় বিএনপির সম্পৃক্ততা, ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা, এবং বিভিন্ন বিএনপি নেতা ও জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদের অভিযোগ প্রতিষ্ঠা করতে মিথ্যা সংবাদ ছাপিয়েছে পত্রিকাটি। এইসব প্রতিবেদন দেশের বাইরে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং আওয়ামী লীগের জন্য সহায়ক ভূমিকা রাখে।
সম্প্রতি দেশের সর্বোচ্চ আদালত ২১ আগস্ট মামলার সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন, এবং স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে বিএনপির সম্পৃক্ততার কোনো প্রমাণ নেই। অথচ প্রথম আলো এই মামলায় বিএনপিকে দায়ী করে ধারাবাহিকভাবে ভুল তথ্য পরিবেশন করেছে।
প্রথম আলো বিএনপির আন্দোলনকে নিয়মিত অবজ্ঞা ও উপহাস করেছে। আন্দোলন ও সংগঠন নিয়ে তাদের নেতিবাচক ভাষ্য সাধারণ মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। যুদ্ধাপরাধ, দুর্নীতি ও জঙ্গিবাদ ইস্যুকে সামনে এনে পত্রিকাটি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পক্ষের পক্ষে মাঠে নেমেছে বলেই অনেকে মনে করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের আচরণ সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থী এবং গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। সাংবাদিকতার নামে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও চরিত্র হননের এই প্রবণতা দেশের গণতান্ত্রিক বিকাশে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুত্র: কালের কণ্ঠ