গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে নতুন রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি) আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দলটি গঠিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সমন্বয়ে, যা গত বছরের গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল। দলের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন নাহিদ ইসলাম, যিনি জুলাই আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক তথ্য উপদেষ্টা।
আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এনসিপি নেতারা বাংলাদেশে ভারত ও পাকিস্তানপন্থী রাজনীতির বিরোধিতা করে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। নাহিদ ইসলাম বলেন, “বাংলাদেশে ভারতপন্থী-পাকিস্তানপন্থী কোনো রাজনীতি চলবে না। আমরা বাংলাদেশের স্বার্থকে সামনে রেখে রাষ্ট্রকে পুনর্গঠন করব।”
দলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ (দক্ষিণাঞ্চল) উল্লেখ করেন, “গণভবনে কে যাবে তা নির্ধারিত হবে বাংলাদেশ থেকে, ভারত থেকে নয়।”
‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি) ব্যাকড্রপে ভারতীয় আধিপত্যবাদ
তবে, অনুষ্ঠানের ব্যাকড্রপে প্রদর্শিত এলইডি স্ক্রিনে ভারতের মানচিত্রে পাকিস্তান অধ্যুষিত আজাদ কাশ্মীর, গিলগিট-বালটিস্তান এবং চীনের সাথে বিরোধপূর্ণ অরুণাচল প্রদেশকে অন্তর্ভুক্ত দেখানো হয়, যা ভারতের আধিপত্যবাদের মানচিত্র হিসেবে সমালোচিত হয়েছে। এতে তাদের কথার সাথে কাজের মিল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং নেটিজেনদের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।
এনসিপির ঘোষণাপত্রে বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে। তারা গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেছে।
নতুন এই রাজনৈতিক দলকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্বাগত জানিয়েছেন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তাদের ভূমিকার প্রতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এনসিপির এই দ্বৈত অবস্থান তাদের ভবিষ্যত কার্যক্রমে কতটুকু প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।