বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারের খরচ কমাতে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি (বিএসসিসিএল) এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। গতকাল কোম্পানির বোর্ড সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশের ইন্টারনেট সেবার পাইকারি মূল্যে ১০ শতাংশ হ্রাস করা হবে। এই উদ্যোগ মোবাইল ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ড সেবার ব্যয়ে সরাসরি প্রভাব ফেলবে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য স্বস্তির বার্তা নিয়ে এসেছে।
প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানান, সরকার দেশের জনগণের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায়, পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাস একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে স্তরে সকল ব্যান্ডউইথের দাম ১০ শতাংশ কমে যাবে, যা ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় কমাবে এবং তারা ব্যবহারকারীদের আরও সাশ্রয়ী সেবা দিতে পারবে।
এছাড়া, মোবাইল অপারেটরদের জন্য ডিডাব্লিউডিএম (DWDM) সুবিধা চালুর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে, যা ট্রান্সমিশন খরচে প্রায় ৩৯ শতাংশ সাশ্রয় আনবে। ফলে মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের সেবার ব্যয় কমিয়ে ভোক্তাদের আরও কম মূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেবে। ইতোমধ্যে টেলিকম অপারেটরদের সঙ্গে আলোচনাও সম্পন্ন হয়েছে, এবং তারা গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর আশ্বাস দিয়েছে।
ফয়েজ আহমদ আরও জানান, দেশের ব্যান্ডউইথ সক্ষমতা বাড়াতে বাংলাদেশ আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল, সিমিউই-৬ (SEA-ME-WE 6)-এর সঙ্গে যুক্ত হবে। নতুন এই ক্যাবল সংযোগের ফলে ইন্টারনেটের গতি ও স্থিতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবহারকারীরা আরও উন্নত ও নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা উপভোগ করতে পারবেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে এবং ইন্টারনেট সেবার বিস্তৃতি ত্বরান্বিত করবে। ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা এবং দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের ভূমিকা দিন দিন বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ইন্টারনেটের মূল্য হ্রাস সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেও উপকৃত করবে।
অর্থনীতিবিদরা আশা করছেন, এই উদ্যোগ ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং ভবিষ্যতে আরও উন্নত ও সাশ্রয়ী ইন্টারনেট পরিষেবা নিশ্চিত করবে।