ঢাকার গুলশানে সাবেক এক এমপির বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিও ঘিরে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে বলতে শোনা যায় আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া চাঁদাবাজির নির্দেশদাতা। এদিকে অপুর স্ত্রী বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের প্রসঙ্গ ঘিরে মন্তব্য করেছে।
ভিডিওতে অপু দাবি করেন, গুলশানের ওই বাড়িতে তার যাওয়া এবং সেখানে ‘ফেঁসে যাওয়া’ সম্পর্কে বিস্তারিত কথা বলেছেন। তবে বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “পাঁচই অগাস্ট ২০২৪-এর পরে ওর সাথে আমার কখনো দেখা হয়নি, কথাও হয়নি এবং রিয়াদ নামের আরেকজনের সঙ্গে আমার কোনো পরিচয় নেই। আমাদের কখনো দেখা হয়নি।”
এদিকে, ভিডিও ফাঁসের পেছনে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছেন অপুর স্ত্রী কাজী আনিশা। তিনি দাবি করেন, গ্রেফতারের আগে ৩১ জুলাই রাতে অপুকে জোর করে ইশরাক হোসেনের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে চাপের মুখে ভিডিও করার জন্য বাধ্য করা হয়। আনিশা আরও বলেন, ইশরাক হোসেনই ডিবিকে ফোন করে অপুকে ধরিয়ে দিয়েছেন এবং রিমান্ডের সময় আসিফ মাহমুদ বা নাহিদ ইসলামের নাম দিতে চাপ দেওয়া হয়েছিল।
ভিডিওতে অপু জানান, ১৬ জুলাই রাত পেরিয়ে ১৭ তারিখ ভোর চারটা ১০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে গুলশান ২ পার হয়ে ওয়েস্টিন হোটেলের নিচে সিএফমোটো বাইকে হেলমেট পরা অবস্থায় আসিফ মাহমুদ তার সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া অপু ভিডিও ধারণ করার সময় ইশরাক হোসেনের উপস্থিতি এবং তার চাপের কথাও উল্লেখ করেছেন।
অপুর বক্তব্যে তিনি বলেন, “রাতের মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে অর্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলো সবই চোখের সামনে। যেসব ছেলেপেলেরা হলে থাকতে পারব না, তাদের টাকা কীভাবে আসে, কারা ডোনেশনের মাধ্যমে মেস ভাড়া চালায়, তা সবাই জানে।”
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, তিনি গ্রেফতারের পর যে কোনো অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, “সিসিটিভিতে যে কাউকে যদি আমার সঙ্গে যুক্ত দেখানো হয়, তা কতটা বিশ্বাসযোগ্য, সেটা আমি জানি না। এটা তদন্তের বিষয়।”
অন্যদিকে, আনিশা বলেন, ভিডিও প্রকাশ এবং তার পেছনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ভিডিওর সব তথ্যের সত্যতা এখনও স্বাধীনভাবে যাচাই করা যায়নি। তবে তিনি দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি ইশরাক হোসেনের সম্পৃক্ততা রয়েছে।
বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তার ফোন ও মেসেজের মাধ্যমে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনা রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে। সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরই শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে আনিশা এই অভিযোগগুলো প্রকাশ করেন। তিনি জানান, গ্রেফতারের সময় এবং ভিডিওর ক্ষেত্রে অপু কোনো স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, বরং জোরপূর্বক বাধ্য হয়েছেন।