নোটিশ:
শিরোনামঃ
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায়: সরকারের বিবৃতি গাজায় ভয়াবহ হামাস হামলা, নিহত ১৯ ইসরাইলি সেনা ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে বলিউডে সিনেমা তৈরির হিড়িক ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২১ মে থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু গোপনে বিদেশে পাড়ি জমালেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ভারত-পাকিস্তানকে সংঘর্ষ থামানোর আহ্বান ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক স্টেভি অ্যাওয়ার্ড বিজয়ী তালিকায় গুগল-অ্যামাজনের সাথে বাংলাদেশী প্রকৌশলী তাসরুজ্জামান বাবু ভারতের হামলার পাল্টা জবাবে প্রস্তুত পাকিস্তান, সশস্ত্র বাহিনীকে অনুমতি ঠাকুরগাঁও সীমান্তে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে বিএসএফ পুঁজিভিত্তি জোরদার করতে ১,৫০০ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুর পরিকল্পনা পূবালী ব্যাংকের

আফ্রিকায় ড্রোন হামলায় প্রায় ১,০০০ বেসামরিক নাগরিক নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১১ মার্চ, ২০২৫
  • ২৪ বার দেখা হয়েছে
নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তাওরীদ লগবাজা (কেন্দ্রে) অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নাইজেরিয়ার তুদুন বিরি গ্রামে ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলার শিকারদের কবর পরিদর্শন করছেন, ছবি: এপি
নাইজেরিয়ার সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল তাওরীদ লগবাজা (কেন্দ্রে) অন্যান্য সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে নাইজেরিয়ার তুদুন বিরি গ্রামে ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখে সেনাবাহিনীর ড্রোন হামলার শিকারদের কবর পরিদর্শন করছেন, ছবি: এপি

আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে চালকবিহীন বিমান বা ড্রোন ব্যবহারের হার দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা প্রায়ই ব্যাপক বেসামরিক হতাহতের কারণ হচ্ছে, নতুন এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ড্রোন হামলার ব্যাপকতা ও এর প্রভাব

আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ড্রোন ব্যবহার করছে, তবে এই ড্রোন হামলাগুলো বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ড্রোন ওয়ারস ইউকে নামক সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, নভেম্বর ২০২১ থেকে নভেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত অন্তত ৫০টি হামলায় ৯৪৩ জনের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।

“ডেথ অন ডেলিভারি” শিরোনামের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড্রোন হামলাগুলো প্রায়ই বেসামরিক জনগণ ও যোদ্ধাদের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রকৃত প্রাণহানির সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক দেশ গোপনে ড্রোন অভিযান পরিচালনা করে।

কেন আফ্রিকার দেশগুলো ড্রোন কিনছে?

প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ মাঝারি উচ্চতা ও দীর্ঘস্থায়ী (MALE) ড্রোন সংগ্রহের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।

২০২২ সাল থেকে কমপক্ষে ১০টি আফ্রিকান দেশ এই অস্ত্র সংগ্রহ করেছে। সরকারগুলো এই ক্রয়ের কারণ হিসেবে বিদ্রোহ ও নিরাপত্তা হুমকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের যুক্তি দেখিয়েছে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন। অনেক ড্রোন হামলায় বেসামরিক মানুষ নিহত হচ্ছে, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদনের লেখক কোরা মরিস বলেন, ড্রোনকে আধুনিক ও কার্যকর যুদ্ধের একটি উপায় হিসেবে প্রচার করা হয়েছে, যেখানে সেনাদের জন্য ঝুঁকি কম।

তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ড্রোনের ব্যবহার সেনাবাহিনীর জন্য আক্রমণ পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাত্রা আরও কমিয়ে দিয়েছে, ফলে সহজেই হামলা চালানো হচ্ছে এবং এতে বেসামরিক প্রাণহানি বাড়ছে।

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি ও ড্রোনের প্রসার

ড্রোন ক্রয়ের পেছনে আফ্রিকার দেশগুলোর সামরিক আত্মনির্ভরশীলতার চেষ্টা এবং নতুন সরবরাহকারীদের দিকে ঝোঁকার প্রবণতা রয়েছে।

লন্ডনের রয়্যাল হোলোওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান মাইকেল স্পাগাট বলেন, এটি মূলত অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী সমাধান হওয়ার কারণে জনপ্রিয় হয়েছে।

তিনি বলেন, “ড্রোন কেনা মানে কম খরচে শক্তিশালী অস্ত্রশস্ত্র অর্জন করা। এতে হামলাকারীদের পাইলট নিহত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে না।”

কোন দেশগুলোতে ড্রোন হামলা বেশি হয়েছে?

প্রতিবেদনে ছয়টি দেশ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে ড্রোন হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে—

  • সুদান – গৃহযুদ্ধে উভয় পক্ষই (সুদানের সেনাবাহিনী ও র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস) ড্রোন ব্যবহার করেছে, যা বেসামরিক অবকাঠামোতে আঘাত হেনেছে।
  • সোমালিয়া – আল-শাবাবের বিরুদ্ধে পরিচালিত ড্রোন হামলায় বেসামরিক প্রাণহানি উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
  • নাইজেরিয়া – বোকো হারাম ও অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে ড্রোন হামলায় অসংখ্য বেসামরিক মানুষ নিহত হয়েছে।
  • বুরকিনা ফাসো – সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম বৃদ্ধি পাওয়ার পর ড্রোন হামলায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটছে।
  • মালি – ড্রোন হামলা ক্রমবর্ধমান হারে বেসামরিক লোকদের হত্যা করছে।
  • ইথিওপিয়া – টিগ্রায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ড্রোন হামলায় শরণার্থী শিবির ও বাজার আক্রান্ত হয়েছে।

কিছু ভয়াবহ ড্রোন হামলা

প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি বড় হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে—

  • নাইজেরিয়া, ডিসেম্বর ২০২৩: তুদুন বিরি গ্রামে ৮৫ জন নিহত। এটি একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জড়ো হওয়া মানুষদের ওপর চালানো ভুল হামলা ছিল।
  • ইথিওপিয়া, ২০২২-২৩: ওরোমিয়া অঞ্চলে একটি গ্রামে ড্রোন হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়।
  • সোমালিয়া, মার্চ ২০২৪: জাফি ফার্ম ও বাগদাদ গ্রামে ড্রোন হামলায় ২৩ জন নিহত।
  • বুরকিনা ফাসো, আগস্ট ২০২৩: বুরো গ্রামের বাজারে ড্রোন হামলায় অন্তত ২৮ জন নিহত।
  • সুদান, সেপ্টেম্বর ২০২৩: গোরো মার্কেটে হামলায় ৪৬ জন নিহত।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “বেসামরিক হতাহতের বিষয়ে প্রকৃত তদন্তের অভাব রয়েছে।”

ড্রোনের বিক্রি ও নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনীয়তা

গত ১০ বছরে ড্রোন পরিচালনাকারী দেশের সংখ্যা ৪ থেকে ৪৮ এ পৌঁছেছে।

বর্তমানে তিনটি আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ড্রোন রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হলেও এগুলো “অত্যন্ত দুর্বল”।

কোরা মরিস ও মাইকেল স্পাগাট মনে করেন, ড্রোনের ব্যবহার আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে এবং ভবিষ্যতে অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীগুলোর কাছেও শক্তিশালী ড্রোন পৌঁছে যেতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ড্রোনের প্রসার রোধ করতে এখনই আন্তর্জাতিকভাবে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রণয়ন করা জরুরি।

সূত্র: আল জাজিরা

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT