নির্বাচন কমিশন (ইসি) একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রণীত বিতর্কিত ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিশেষ করে, প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের বিধানটি বাদ দেওয়া হচ্ছে।
বর্তমান কমিশন মনে করছে, আগের কমিশনের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের দায় তারা নেবে না।
নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, ভোটকেন্দ্র স্থাপনের নীতিমালা পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, “যদি কোনো নীতিমালা নিরপেক্ষ না হয় বা বিশেষ কোনো পক্ষকে সুবিধা দেয়, তবে সেটি পরিবর্তন করা উচিত।”
বিভিন্ন পর্যায়ের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নবম সংসদ নির্বাচন থেকে দ্বাদশ সংসদ পর্যন্ত প্রতিটি কমিশন ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন এনেছে।
তবে সবচেয়ে বিতর্কিত সিদ্ধান্ত আসে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সময়।
তারা আগের নীতিমালার নিরপেক্ষ কিছু ধারা বাদ দিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণে সম্পৃক্ত করে, যা রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সুযোগ তৈরি করেছিল।
নবম ও দশম সংসদের নীতিমালায় নিরপেক্ষতা রক্ষার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকলেও পরবর্তী কমিশনগুলো তা বাদ দেয়।
এর বদলে, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মতামতের ওপর ভোটকেন্দ্র নির্ধারণের ভার দেওয়া হয়।
ফলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, আগের কমিশনের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সংশোধন করা হবে।
তিনি বলেন, “নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব তার নিজস্ব কাঠামোর মধ্যেই থাকা উচিত, প্রশাসনের ওপর নির্ভর করা ঠিক নয়।”
এ বিষয়ে নাগরিক সংগঠন ‘সুজন’-এর সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন,
“ভোটকেন্দ্র স্থাপনে বিতর্কিত নীতিমালা রেখে আগের কমিশন সরকারদলীয় প্রার্থীদের সুবিধা দিয়েছে। এটি পরিবর্তন না করলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব হবে না।”
নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে নতুন নীতিমালার খসড়া তৈরি করেছে, যেখানে বিতর্কিত বিষয়গুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। সংশোধন চূড়ান্ত হলে এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।