নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনের মাধ্যমে ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুততর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। নতুন অধ্যাদেশের খসড়ায় শিশু ধর্ষণের মামলার বিচারের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
সোমবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানান, অধ্যাদেশটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার আবার উপস্থাপন করা হবে।
ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যবস্থা
সরকার ধর্ষণ মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খসড়া অনুযায়ী, ধর্ষণ মামলার তদন্তের সময় ৩০ দিন থেকে কমিয়ে ১৫ দিন এবং বিচারপ্রক্রিয়া ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করার বিধান রাখা হয়েছে।
এছাড়া, ডিএনএ পরীক্ষার সনদ ছাড়াই চিকিৎসা প্রতিবেদন ও অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে বিচার পরিচালনার সুযোগ রাখা হয়েছে। এর ফলে মামলা নিষ্পত্তি দ্রুত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশেষ ট্রাইব্যুনাল ও ধর্ষণের সংজ্ঞা সংশোধন
খসড়ায় শিশু ধর্ষণের মামলার বিচার পৃথকভাবে করার জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের কথা বলা হয়েছে। ধর্ষণের সংজ্ঞায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে, যেখানে বলৎকারসহ যেকোনো ধরনের যৌন সহিংসতাকে ধর্ষণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
আরও পড়ুনঃ
মাগুরায় নির্যাতিত শিশুর মৃত্যু — সেনাবাহিনীর শোক প্রকাশ
বিচারাধীন মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও ডিএনএ ল্যাব স্থাপন
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, মাগুরায় আট বছরের শিশুর ধর্ষণ ও হত্যার মামলার বিচার দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে। মামলাটির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে, এবং ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন শিগগিরই পাওয়া যাবে।
ধর্ষণ মামলার দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে দুটি নতুন ডিএনএ গবেষণাগার স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি, দ্রুত বিচারক নিয়োগের মাধ্যমে বিচারব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাজার মনিটরিং ও সামাজিক স্থিতিশীলতার আহ্বান
বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানি ও সরবরাহ ব্যবস্থার ওপর নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া, মাজার ভাঙচুরসহ উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নতুন এই অধ্যাদেশ বাস্তবায়িত হলে ধর্ষণ মামলার বিচার দ্রুততর হবে এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে।
আমাদের পথ চলায় সঙ্গী হন আপনিও: