
বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুটেক্স) শনিবার (২৫ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত হলো ‘জেনরা ফ্যাশন ওডিসি–২০২৫: ক্যাম্পাস এডিশন’। ফ্যাশন ব্র্যান্ড জেনরার উদ্যোগে এবং বুটেক্স ফ্যাশন সোসাইটির সহ-আয়োজনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি দিনব্যাপী উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়।
সকাল ১০টায় উপাচার্য ড. মো. জুলহাস উদ্দিনের উদ্বোধনী বক্তব্য ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্বোধনী পর্বের পর অনুষ্ঠিত হয় ‘ইন্টারলেসিং বাংলাদেশ’স ফ্যাশন ডেসটিনি’ শীর্ষক ওপেন ওয়ার্কশপ। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্লুচিজ-এর চিফ অপারেটিং অফিসার ফজলে রাব্বি এবং মাস্কো ডিজাইন হাবের সিনিয়র প্রোডাক্ট ম্যানেজার কাজী তৌহিদুল আলম। তারা বাংলাদেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করেন।
বিকেল ৪টার পর শুরু হয় প্রতিযোগিতার মূল আকর্ষণ ‘জেনরা গ্র্যান্ড রানওয়ে শো’। এতে অংশগ্রহণকারীরা তিনটি বিভাগে তাদের পোশাক ডিজাইন উপস্থাপন করেন— স্ট্রিট ওয়্যার, ট্র্যাডিশনাল ওয়্যার ও সাসটেইনেবল ওয়্যার। প্রতিটি বিভাগেই ফ্যাশন প্রবণতা, ঐতিহ্য, এবং পরিবেশবান্ধবতার সৃজনশীল মিশ্রণ দেখা যায়।
সন্ধ্যায় আয়োজিত হয় ‘হেরিটেজ টু রানওয়ে: দ্য এক্সপেডিশন অব বাংলাদেশি ফ্যাশন’ শীর্ষক ইন্টারঅ্যাকটিভ প্যানেল ডিসকাশন। এতে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা ও মাত্রা অ্যাডভার্টাইজিং-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা আফজাল হোসেন, বিবিয়ানার প্রতিষ্ঠাতা লিপি খন্দকার, বিশ্বরঙ-এর প্রতিষ্ঠাতা বিপ্লব সাহা, ঢাকা কিচ-এর প্রতিষ্ঠাতা কুহু প্লামন্দন, প্রথম আলো হাল ফ্যাশন কনসালট্যান্ট শেখ সাইফুর রহমান, মাস্কো গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং অ্যান্ড মার্চেন্ডাইজিং) শেখ মামুন ফেরদৌস, এবং কে ক্রাফ্ট-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক খালিদ মাহমুদ খানসহ আরও অনেকে।
উপাচার্য ড. মো. জুলহাস উদ্দিন বলেন, “আজকের আয়োজনের দুইটি সেশনে থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। বুটেক্স ফ্যাশন সোসাইটিকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে ফ্যাশন শো আয়োজন করা হবে বলে আশা করছি।”
মাস্কো গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার শেখ মামুন ফেরদৌস বলেন, “ফ্যাশন একটি পরিবর্তনশীল বিষয়। দেশজ ব্র্যান্ডগুলোর সিগনেচার ধরে রাখা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। প্রজন্ম ও সময় অনুযায়ী ফ্যাশনে ভিন্নতা আনতে হবে।”
টেক্সটাইল ফ্যাশন অ্যান্ড ডিজাইন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মো. মাহবুবুর রাহমান বলেন, “বুটেক্স ফ্যাশন সোসাইটি গত দুই দিন ধরে যে পরিশ্রম করেছে, তার সফল প্রতিফলন আমরা র্যাম্প ওয়াকে দেখেছি। আশা করি অংশগ্রহণকারীরা ভবিষ্যতে দেশের ফ্যাশন সেক্টরকে নেতৃত্ব দেবে।”
প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীরা প্রতিটি ক্যাটাগরিতে সর্বনিম্ন দুইটি ও সর্বোচ্চ তিনটি ডিজাইন জমা দেওয়ার সুযোগ পান। প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেন বুটেক্সের শিক্ষার্থী রেজওয়ানা রহমান মিম, দ্বিতীয় স্থান পান বাংলাদেশের ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের আলমা খানম, এবং প্রথম স্থান অর্জন করেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ সায়মুন হক নাঈম। পুরস্কার ও ক্রেস্ট বিতরণের মাধ্যমে দিনব্যাপী এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটে।