“শহীদ আবরার ফাহাদ লাইব্রেরি” এখন বুয়েটের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম পরিবর্তন করে “শহীদ আবরার ফাহাদ লাইব্রেরি” রাখা হয়েছে। বুয়েট প্রশাসন এক আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ নামকরণ করা হয়েছে, যা শহীদ আবরার ফাহাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি ন্যায়বিচারের পক্ষে শিক্ষার্থীদের অবস্থানকেও প্রতিফলিত করে।
বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদ ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি পোস্ট দেওয়ার পর ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী তাকে বুয়েটের শের-ই-বাংলা হলের একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে রাতভর পিটিয়ে হত্যা করে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে এবং শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন।
এই ঘটনার পর থেকেই বুয়েটের শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির নাম “শহীদ আবরার ফাহাদ লাইব্রেরি” করার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পর অবশেষে বুয়েট প্রশাসন এই দাবিকে বাস্তবায়ন করল, যা শিক্ষার্থীদের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
লাইব্রেরির নতুন নামকরণে শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্বস্তি ও সন্তুষ্টি লক্ষ্য করা গেছে। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “এই নামকরণ শুধু আবরার ফাহাদের স্মৃতি ধরে রাখবে না, বরং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস ও অনুপ্রেরণা জোগাবে।” আরেকজন শিক্ষকের মতে, “এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকতে উৎসাহিত করবে।”
বুয়েট প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত শুধু একটি নাম পরিবর্তন নয়, বরং এটি ন্যায়বিচারের প্রতি এক দৃঢ় বার্তা বহন করে। এটি দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং ন্যায়ের পথে অবিচল থাকার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।
লাইব্রেরির নতুন নামকরণে বুয়েটে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে খুশির আমেজ লক্ষ্য করা গেছে। একজন শিক্ষার্থী বলেন, “এই নামকরণ কেবল আবরার ফাহাদের স্মৃতিকে ধরে রাখবে না, বরং শিক্ষার্থীদের ন্যায়বিচারের জন্য সোচ্চার হওয়ার প্রেরণা যোগাবে।”
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে: আসিফ মাহমুদ
Leave a Reply