সম্প্রতি বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাস বলেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয় ইউটিউবার ও সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইনের একটি পোস্টকে ইশারা করে তিনি এই মন্তব্য করেছেন বলে অনেক ধারণা করছেন।
তবে একইসাথে প্রশ্ন উঠেছে জেনজিদের চোখে চব্বিশ এর অবস্থায় আসলে কোথায়? তারাও কি পলাতক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সংঘটিত ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অর্জিত ‘স্বাধীনতা’কে একাত্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার সাথেই তুলনা করছে? মজার ব্যাপার হলো, এই উত্তর লুকিয়ে আছে জেনজিদের ৫ আগস্টে হাসিনা সরকারের পলায়নের পর দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতিতে।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দেয়ালে দেয়ালে তারা যে অসংখ্য গ্রাফিতি এঁকেছে তাতে নিজেদের মনের সুপ্ত কথা যেন বলা হয়ে গেছে। এমনই একটি গ্রাফিতি দেশের বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, যেটাতে দেখানো হয়েছে ১৯৭১ লেখা থেকে স্পটলাইট বের হয়ে তার নিচে লেখা ২০২৪ লেখার উপর পড়ছে। অর্থাৎ চব্বিশ একাত্তরের আলোতেই উদ্ভাসিত। একাত্তরের মধ্যেই চব্বিশ নিহীত।
এই গ্রাফিতিতে আরও লেখা রয়েছে, স্বাধীনতা এনেছি, সংস্কারও আনব। অর্থাৎ একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যদিও জেনজিদের জন্ম হয়নি, তবুও তারা সেই স্বাধীনতাকে ‘এনেছি’ বলে আত্মীকরণ করছে, এবং সংস্কারকে তারই ধারাবাহিকতায় আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।
কাজেই, জেনজিদের চোখে ১৯৭১ স্বাধীনতার বছর, আর ২০২৪ সংস্কারের বছর। যদিও ২০২৪ এ প্রায় ২ হাজার মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে, যা ১৯৭১ এর শহীদদের সংখ্যার তুলনায় নিতান্তই নগণ্য, কিন্তু আন্দোলনের সেই দিনগুলোর ভয়াবহতা স্থান-কাল-পাত্র বিবেচনায় একাত্তর থেকে কোনো অংশেই কম ছিল না। অনেকে বলছেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে, আর চব্বিশের লড়াই ছিল ভারতীয় আজ্ঞাবাহী নিজ দেশের শাসকের বিরুদ্ধে, কাঠিন্য বিবেচনায় যা আরো ভয়ানক।একাত্তরে একবার স্বাধীনতা অর্জনের পর যদি দেশ সত্যিকার অর্থেই স্বাধীন হত তাহলে চব্বিশের প্রয়োজন হত না। কাজেই চব্বিশকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলা মোটেও বাতুলতা নয়।