আপনার সিভি/রেজ্যুমেই সম্ভাব্য নিয়োগকর্তার কাছে আপনার প্রথম ছাপ। নিজেকে চমৎকার ভাবে মেলে ধরার তাই সুন্দরভাবে সিভি/রেজ্যুমে বানানোর কোনো বিকল্প নেই।
আপনি যদি প্রথমবারের মতো চাকরির জন্য আবেদন করেন বা নতুন কোনো সংস্থা বা শিল্পে কাজ করতে চান, তাহলে আপনার সিভি/রেজ্যুমে নিয়োগকর্তার কাছে আপনার দক্ষতা ও সম্ভাবনার প্রাথমিক পরিচয় বহন করবে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আপডেট ও সংশোধনের মাধ্যমে এটিকে আরও কার্যকর করুন।
আপনার অনন্য দক্ষতা তুলে ধরার জন্য সঠিক টেমপ্লেট নির্বাচন থেকে শুরু করে নিয়োগ সফটওয়্যারের (Applicant Tracking System – ATS) ফিল্টার পাস করতে প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করা পর্যন্ত—বিভিন্ন কৌশল আপনার সিভিকে আরও উন্নত করতে পারে। এই ১০টি টিপস অনুসরণ করে একক ডকুমেন্টে আপনার সার্টিফিকেশন, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও অর্জনগুলোকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করুন।
একটি সাধারণ ডকুমেন্টে জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করা সম্ভব হলেও, গ্রাফিক ডিজাইন টুল (যেমন ক্যানভা) ব্যবহার করে আরও আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা যায়। ডিজাইন ও বিন্যাস বাছাই করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর কথা ভাবুন:
আপনার পেশাগত পরিচিতি সংক্ষেপে তুলে ধরুন। এই বিভাগে দুই বা তিনটি লাইন ব্যবহার করতে পারেন যেখানে আপনার বিশেষজ্ঞ ক্ষেত্র (যেমন “ডিজাইন থিঙ্কিং স্পেশালিস্ট” বা “তদন্তমূলক সাংবাদিক”) এবং গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতাগুলো উল্লেখ থাকবে। প্রতিটি চাকরির জন্য প্রাসঙ্গিক দক্ষতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করুন।
এই অংশে আপনার ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও চাকরির উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন। এটি নিয়োগকর্তাকে আপনার আগ্রহ ও প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে আশ্বস্ত করবে।
আপনার নাম ও যোগাযোগের তথ্যের কাছাকাছি আপনি প্রাসঙ্গিক অনলাইন প্রোফাইল (যেমন লিংকডইন, পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট) উল্লেখ করতে পারেন। তবে নিশ্চিত করুন যে, আপনার অনলাইন প্রোফাইল পেশাদারিত্ব বজায় রাখে এবং অপ্রয়োজনীয় বিষয়বস্তু সরিয়ে ফেলা হয়েছে।
আপনার জীবনবৃত্তান্তকে নিয়োগকর্তাদের আবেদন পর্যবেক্ষণ সফটওয়্যারের (ATS) জন্য উপযুক্ত করতে কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন। এর জন্য:
“পরিচালনা করেছেন,” “বাস্তবায়ন করেছেন,” “উন্নয়ন করেছেন” ইত্যাদি কর্মসূচক শব্দ ব্যবহার করে আপনার অভিজ্ঞতা আরও স্পষ্ট করুন। উদাহরণস্বরূপ, একজন সাইবার নিরাপত্তা বিশ্লেষক লিখতে পারেন— “প্রতিষ্ঠানের তথ্যের নিরাপত্তা বাড়াতে ব্যাকআপ সিস্টেম বাস্তবায়ন করেছেন।”
প্রত্যেক চাকরির অধীনে একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিন এবং বুলেট পয়েন্টের মাধ্যমে প্রধান অর্জন উল্লেখ করুন। সম্ভব হলে সংখ্যা ব্যবহার করুন। উদাহরণস্বরূপ:
📌 সাফল্যের ফর্মুলা:
“[ক্রিয়া শব্দ] [X] করতে [Y], যার ফলে [Z] অর্জিত হয়েছে।”
উদাহরণ: “ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট ডিজাইন করেছেন, যার ফলে ফেসবুকে ৩০% কনভার্সন বৃদ্ধি পেয়েছে।”
এই বিভাগটি আপনার ব্যক্তিত্বের দিকগুলো প্রকাশ করতে পারে এবং আপনাকে আরও বহুমুখী পেশাজীবী হিসেবে উপস্থাপন করতে পারে। বিশেষ করে যদি আপনার কর্মজীবনের অভিজ্ঞতা কম থাকে, তাহলে এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিজ-এর মাধ্যমে দক্ষতা তুলে ধরতে পারেন।
আপনার পেশাগত ইতিহাসে যদি চাকরির ফাঁক থাকে বা খুব সংক্ষিপ্ত মেয়াদে কোনো চাকরি করেছেন, তাহলে সেটি ইতিবাচকভাবে ব্যাখ্যা করুন। উদাহরণস্বরূপ, দীর্ঘ সময় ধরে কর্মহীন থাকলে সেখানে স্বেচ্ছাসেবা, শিক্ষণ প্রকল্প, বা ফ্রিল্যান্স কাজের কথা উল্লেখ করুন।
জীবনবৃত্তান্ত চূড়ান্ত করার আগে অপ্রয়োজনীয় অংশগুলো বাদ দিন, যেমন:
সাধারণত, আপনার সিভি/রেজ্যুমে এক পৃষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত, যদি না আপনার ১০-১৫ বছরের বেশি পেশাদার অভিজ্ঞতা থাকে।
আপনার সিভি/রেজ্যুমে’কে আরও কার্যকর ও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য এই কৌশলগুলো অনুসরণ করুন। একটি ভাল সিভি/রেজ্যুমে চাকরি পাওয়ার প্রথম ধাপ, তাই এটি যত্নসহকারে প্রস্তুত করুন।
সূত্র: কোর্সেরা