
ভারতের উদগ্র পররাষ্ট্রনীতির কারণে ক্রমেই বন্ধুহীন হতে হতে শেষপর্যন্ত হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশও। পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে বৈধ-অবৈধ নানা পন্থায় বিবিধ সুবিধা আদায় করেছে ভারত। তাদের রেমিট্যান্সের মোটা একটা অংশ বাংলাদেশ থেকে অর্জন করেও বাংলাদেশকে কথায় কথায় বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে কসুর করত না ভারতের সরকার থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণও। বিশেষ করে বাংলাদেশের নিকটতম প্রতিবেশী রাজ্য হওয়া পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকরাও এদেশের সাধারণ মানুষের প্রতি উগ্র ও প্রভুসুলভ আচরণ করত। চিকিৎসা ও কেনাকাটার উদ্দেশ্যে ভারতে যেত এদেশের বহু মানুষ যা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখত। কিন্তু নিজের কদর্য আচরণ দিয়ে সেই সুযোগ নষ্ট করে এখন বিড়ম্বনায় পড়েছে ভারত। বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে ধুঁকছে কলকাতা একেই বুঝি বলে অহঙ্কার পতনের মূল।
যাত্রীর অভাবে কলকাতার সেন্ট মার্টিন পরিবহনের মেয়েদের জামাকাপড়ের দোকানে পরিবর্তিত হওয়া যেন তারই জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। অথচ ঈদের ছুটির সময়ে টিকিট এর জন্য সময়টা বেশ রমরমা থাকার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমানে ভারতীয় ভিসানীতির পরিবর্তনের ফলে এলাকা এখন নীরব। যাত্রী সংকটে পড়ে ‘সেন্টমার্টিন পরিবহন’ কাউন্টার। তথ্যমতে, আগে প্রতিদিন সেন্টমার্টিন পরিবহনের ১৫-২০টি বাস চলাচল করত। কিন্তু এখন যাত্রী সংকট এতটাই তীব্র যে পরিবহন ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে ৩৫ জন কর্মচারীর বেতন পরিশোধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে পরিবহন কাউন্টারটি নারীদের পোশাকের দোকানে রূপান্তর করা হয়েছে। এখন সেখানে থ্রি-পিস, স্কার্টসহ নানা পোশাক বিক্রি হচ্ছে।
পরিবহন পরিষেবাটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাংলাদেশি যাত্রীদের অভাবে ব্যবসা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কর্মচারীদের জীবিকা চালিয়ে নিতে বাধ্য হয়ে ব্যবসার ধরন বদল করতে হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) প্রাক্তন পরিবহন ব্যবসায়ী ও বর্তমানে পোশাক বিক্রেতা মোহাম্মদ সরোজ খান জানান, “যখন বাস চলাচল করত, তখন প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি চলাচল করত। আর এখন মাত্র ৩ থেকে ৪টি বাস চলছে। এই অবস্থায় পরিবহন ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।”
ব্যবসা পরিবর্তনের পর সফলতা এসেছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কোনোমতে চলছে। স্থানীয় ক্রেতারা কিছু কেনাকাটা করছেন, যা আমাদের কিছুটা হলেও আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।”
তিনি স্পষ্ট করে জানান, “এই এলাকা বাংলাদেশিদের জন্য জমজমাট ছিল। তারা না থাকলে ব্যবসা টিকে থাকা কঠিন। নিউমার্কেট, পার্ক স্ট্রিটসহ প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা মূলত বাংলাদেশিদের উপর নির্ভরশীল। এখন স্থানীয় ক্রেতারা দু’-একজন আসছেন, কিনছেন, কিন্তু সেটি যথেষ্ট নয়।”
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd