২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ—এই তিন মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো প্রায় ৭ হাজার ৯০৯ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, এটি আগের প্রান্তিক অর্থাৎ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর ২০২৪ সময়কালের তুলনায় ২৭ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা বা ৩৫৩ শতাংশ কম। তবে ২০২৪ সালের একই প্রান্তিকের তুলনায় পুনঃতফসিল বেড়েছে ২২৩ শতাংশ, যা ছিল ২ হাজার ৪৪৮ কোটি টাকা।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শেষ দিকে ব্যাংকগুলো আর্থিক প্রতিবেদন ভালো দেখাতে পুনঃতফসিল বাড়িয়ে দেয়। ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে কিছু নগদ অর্থ নিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়। ফলে ডিসেম্বর প্রান্তিকে পুনঃতফসিল অস্বাভাবিকভাবে বাড়ে, আর পরবর্তী প্রান্তিকে তা কমে আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে মোট ৫৬ হাজার ৫৮২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করা হয়েছে, যেখানে ২০২৩ সালে এই অঙ্ক ছিল ৬২ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা। পুনঃতফসিল করেও খেলাপি ঋণ কমছে না, বরং চলতি বছরের মার্চ শেষে রেকর্ড ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে খেলাপি ঋণ, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৪.১৩ শতাংশ।
তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৭৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা। গত বছরের মার্চের তুলনায় এক বছরে তা বেড়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের হার পৌঁছেছে ৪৫.৭৯ শতাংশে, যা গত ডিসেম্বরে ছিল ৪২.৮৩ শতাংশ। অন্যদিকে বেসরকারি ব্যাংকে খেলাপির হার বেড়ে ২০.১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনকালে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। অর্থনীতিবিদদের দাবি, সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু প্রভাবশালীর কারণে ব্যাংক খাত থেকে বিপুল অর্থ লোপাট হয়ে বিদেশে পাচার হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাগামহীনভাবে বেড়েছে।