প্রথম আলোর শব্দচাতুরী - ‘নির্দেশ’ কে ‘অনুমতি’ বানিয়ে ইতিহাস বিকৃতি! - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
তুরস্কের দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কুবির সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষর কওমি ডিগ্রিধারীদের জন্য কাজী হওয়ার দরজা খুলল; আরও সরকারি খাত উন্মুক্তের দাবি সীমান্তে তীব্র গুলি বিনিময়, পাকিস্তান–আফগানিস্তান উত্তেজনা চরমে জাককানইবিতে সমুদ্র ও জলবায়ু–বিষয়ক ‘Exploring the Blue Earth’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত দুধকুমার নদে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এসিল্যান্ডের হস্তক্ষেপ, স্বস্তিতে তীরবর্তী বাসিন্দারা ইবিতে জুলাই বিপ্লববিরোধী অভিযোগে ফের ৯ শিক্ষক বরখাস্ত নানিয়ারচর জোন (১৭ই বেংগল) এর মানবিক উদ্যো‌গে বিনামূল্যে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ সিলেট উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রথম নির্বাহী পরিচালক হলেন মো. সাদি উর রহিম জাদিদ আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে ইবিতে আলোচনা সভা জামায়াতের মনোনয়নে কে এই হিন্দু প্রার্থী

প্রথম আলোর শব্দচাতুরী – ‘নির্দেশ’ কে ‘অনুমতি’ বানিয়ে ইতিহাস বিকৃতি!

খোলা কলাম
  • আপডেট সময় বুধবার, ৯ জুলাই, ২০২৫
  • ৩৩৬ বার দেখা হয়েছে
প্রথম আলোর ক্যাপশন, বর্ণণা, নিউজ সব স্থানে লেখা অনুমোদন

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪ সালের  জুলাই আগস্টের সেই দিনগুলো ছিল বিভীষিকাময়। তৎকালীণ সরকার প্রধান শেখ হাসিনা, বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে যে ভয়াবহ রক্তপাতের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তার দলিল-প্রমাণ বারবার সামনে এসেছে। ৫ আগস্ট যাত্রাবাড়ির ঘটনায় বিবিসি’র সেই ঐতিহাসিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের অডিও রেকর্ডিং স্পষ্ট করে বলেছিল, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী তাঁর নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই ‘নির্দেশ’ শব্দটি ছিল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার চূড়ান্ত এবং নির্মম প্রয়োগের প্রতিচ্ছবি।

কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, দেশের শীর্ষ দৈনিক প্রথম আলো সেই ভয়াবহ সত্যকে আড়াল করতে নানাভাবে শব্দের মারপ্যাঁচে লিপ্ত। তারা বিবিসি’র অডিও রেফারেন্সের কথা উল্লেখ করে নিজেদের প্রতিবেদনে লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী নাকি ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি’ দিয়েছিলেন।

এ যেন ইতিহাসের নির্মম সত্যের জায়গায় অনুকম্পার শব্দ প্রয়োগ!

দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা কোনো পক্ষাবলম্বন নয়, সত্য তুলে ধরা। অথচ দেশের সবচেয়ে প্রচারিত দৈনিক যখন সরকার-ঘনিষ্ঠ ভাবমূর্তি রক্ষায় প্রকৃত ‘নির্দেশ’ শব্দটিকে ‘অনুমতি’ বানিয়ে দেয়, তখন এটি শুধু সংবাদ বিকৃতি নয়, বরং ইতিহাস বিকৃতির নামান্তর। একথা সবাই জানে — ‘নির্দেশ’ মানে আদেশ, বাধ্যতামূলক, তৎক্ষণাৎ কার্যকর। আর ‘অনুমতি’ শব্দের অর্থ হচ্ছে, করা যাবে কি না — এমন অনুমোদন। এর মাঝে আকাশ-পাতাল পার্থক্য।

বিবিসি’র অডিওতে স্পষ্ট নির্দেশ ছিল। আর প্রথম আলো সেই ভয়ংকর বাস্তবতাকে লঘু করে ‘অনুমতি’ শব্দ বসিয়ে ঘটনা আড়াল করতে চেয়েছে। এভাবে সংবাদপত্র ইতিহাস বিকৃতি করলে সেটি সাংবাদিকতার নয়, বরং তোষামোদের দলিল হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের একটি অংশ দীর্ঘদিন ধরেই রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় নির্লিপ্ত থেকেছে। আর এখন ‘শব্দচাতুরী’ করে ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম ঘটনার ভয়াবহতা লঘু করার চেষ্টা করছে।

দেশবাসীর এটা জানার অধিকার আছে — কে কী নির্দেশ দিয়েছিল, কবে দিয়েছিল এবং তার ফল কী হয়েছিল। আর গণমাধ্যমের দায়িত্ব হলো সেটি স্পষ্টভাবে তুলে ধরা, তোষামোদ করা নয়।

প্রথম আলোর এই আচরণ সাংবাদিকতার চরম বিশ্বাসঘাতকতা। ‘অনুমতি’ আর ‘নির্দেশ’ এর পার্থক্য বোঝার মত ভাষাজ্ঞান কি তাদের নেই? নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে এ অপপ্রয়াস?

‘সাবাস বাংলাদেশ’ স্পষ্ট ভাষায় বলতে চায় — ইতিহাস বিকৃতি বন্ধ করুন। বিবিসি’র অডিওতে যা বলা হয়েছিল, সেটিই সত্য। আর সেই সত্যের নাম ‘প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ’

দেশবাসীর কাছে আমরা অনুরোধ করবো, এমন শব্দচাতুরীর সংবাদ এড়িয়ে চলুন। ইতিহাস বিকৃতিকারীদের চিহ্নিত করুন।

রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনার শব্দ বিকৃতি কখনো সাংবাদিকতার দায়িত্ব হতে পারে না।

সাবাস বাংলাদেশ-এর পক্ষ থেকে এই বিকৃত সংবাদ প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT