বি-টু স্পিরিট বোম্বার বিমান - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
ইসরায়েলের মিত্র ভারত এখন ইরানের পাশে! ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা নিয়ে যা বলছে ওআইসি লিখছে এআই, ঘুমাচ্ছে মস্তিষ্ক নবীজিকে কটূক্তির অভিযোগে বাবা-ছেলে আটক, উত্তপ্ত লালমনিরহাট সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের পর্যালোচনায় ১৪ সদস্যের কমিটি গঠন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে যুদ্ধের বাজি খেলায় ট্রাম্প: বিজয় না বিপর্যয়? অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সংস্কারসহ ১২৫ দফা রাবি ছাত্রশিবিরের ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রতিক্রিয়ার মুখে ট্রাম্প ভারতে নারীদের একাকী ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র আকাশপথে আঘাত, পাতালে প্রতিরোধ: ইরান-যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সংঘাতের এক বিপজ্জনক সন্ধিক্ষণ

বি-টু স্পিরিট বোম্বার বিমান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় রবিবার, ২২ জুন, ২০২৫
  • ৫৬ বার দেখা হয়েছে

মধ্যপ্রাচ্যে টানটান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াবহ বিমান হামলার ঘটনায় নতুন তথ্য সামনে এসেছে। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এক মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বি-টু স্পিরিট স্টিলথ বোম্বার ব্যবহার করা হয়েছে। খবর বিবিসি ও রয়টার্সের।

মার্কিন এই বি-টু স্পিরিট বোম্বার বিমানই একমাত্র সক্ষমতা রাখে মাটির ৬০ মিটার গভীরে অবস্থিত বাংকার লক্ষ্য করে ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের ‘জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (এমওপি) বোমা নিক্ষেপ করার। এই ‘বাংকার বাস্টার’ বোমা এতটাই শক্তিশালী যে, পারমাণবিক বাঙ্কার বা কংক্রিটের শক্তিশালী ঘাঁটিও গুঁড়িয়ে দিতে পারে। আর এই ভয়াবহ অস্ত্রই ইরানের ফোর্ডো, নাতাঞ্জ এবং ইসফাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় নিক্ষেপ করা হয়।

সূত্র জানায়, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্র তাদের ৪,০০০ কিলোমিটার দূরের একটি বিমানঘাঁটিতে এই বি-টু বোম্বার মোতায়েন রেখেছিল। তবে হামলার দুই দিন আগে এগুলো সরিয়ে নেওয়া হয় প্রায় ৯,০০০ কিলোমিটার দূরের আরেকটি নিরাপদ ঘাঁটিতে। এই কৌশলগত পদক্ষেপ ছিল হামলার পরিকল্পনা গোপন রাখা ও আকাশপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অংশ। কারণ, এই বোম্বারগুলো খুবই সীমিত সংখ্যক রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে গোপন অস্ত্রভাণ্ডারের অংশ।

জানা গেছে, ইরান সরকারের অনুমান ছিল, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিকটবর্তী ঘাঁটি থেকেই আক্রমণ চালাবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই ঘাঁটি থেকে বিমানের অবস্থান সরিয়ে নেওয়ায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সব পূর্বাভাস ভেস্তে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বি-টু বোম্বার এই মিশনে ব্যবহার হওয়া মানে এই অভিযান শুধু বড় সামরিক পদক্ষেপ নয়, বরং একটি বার্তা—যে যুক্তরাষ্ট্র এখন যে কোনো সময় বিশ্বের যেকোনো কোণায় ‘ডিপ আন্ডারগ্রাউন্ড’ লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে সক্ষম।

ট্রাম্প এই হামলাকে ‘অসাধারণ সামরিক সাফল্য’ আখ্যা দিয়ে জাতির উদ্দেশে বলেন, “ফোর্ডোসহ সবকিছু গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ইরানকে এখনই শান্তি করতে হবে। না হলে পরবর্তী হামলা আরও ভয়ঙ্কর হবে।” ট্রাম্পের এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “এটি সাহসিক সিদ্ধান্ত এবং সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ।”

হামলার পর ইরান তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলেছে, তারা শিগগিরই উপযুক্ত প্রতিশোধ নেবে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে জানানো হয়, এখন থেকে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত প্রত্যেক মার্কিন সেনা ও বেসামরিক নাগরিককে বৈধ লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করা হবে। পার্লামেন্ট সদস্য হামিদ রাসাই ঘোষণা করেন, “এই জঘন্য হামলার কঠিন এবং কার্যকর জবাব দেওয়া হবে।”

বিশ্বজুড়ে এই হামলা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্য আরও ভয়াবহ সংঘাতের দিকে এগোচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং রাশিয়াও হামলার সমালোচনা করেছে। অপরদিকে, তেলবাজারে ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০ ডলার বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র শুধু ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের সামরিক ভারসাম্যকেও এক ধাক্কায় বদলে দিল। একই সঙ্গে ট্রাম্প দেখিয়ে দিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের গোপন অস্ত্রভাণ্ডারে কী রয়েছে এবং প্রয়োজনে সেটি প্রয়োগে তারা এতটুকু দ্বিধা করবে না।

পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে, এখন তাই দেখার অপেক্ষা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘাত থামার নয়। উল্টো এই অঞ্চলে আরও ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারণ ইরান প্রতিশোধের জন্য প্রস্তুত এবং যুক্তরাষ্ট্রও পরবর্তী ধ্বংসাত্মক হামলার জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে আছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT