সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনুষ্ঠানিকভাবে দাখিল করা হবে আগামীকাল রোববার—এ তথ্য জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
‘আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ’ উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘গুমের সাথে জড়িতদের অবিলম্বে বিচার কর’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ কথা জানান। এই আয়োজনের উদ্যোক্তা ছিল মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’।
আলোচনায় চিফ প্রসিকিউটর শেখ হাসিনাকে ‘গুম ও আয়নাঘরের নিউক্লিয়াস’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিচার প্রক্রিয়ায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দৃশ্যমান হবে এবং জানান, তাঁরা বিচার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, বিচারিক কাজ পুরোদমে চললেও তদন্ত শেষ করতে সময় লাগবে, কারণ পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ থেকে ১৫টি গুমের ঘটনায় তদন্ত শেষ হয়েছে এবং জুনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, বিচার প্রক্রিয়ায় সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘন না ঘটে এবং পূর্বের ভুলগুলো পুনরাবৃত্তি না হয়।
জুলাই-আগস্টে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে গুলি, হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের জন্য শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
১২ মে মামলার তদন্ত শেষে জানানো হয়, ওই আন্দোলনে ১৪শ’রও বেশি মানুষ নিহত হয়, যার জন্য শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্দেশনা, উসকানি, ও হত্যার দায়ে পাঁচটি অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার ও তাদের অনুগতদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে হত্যার অভিযোগও উত্থাপন করা হয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতন ঘটলে তিনি দেশ ত্যাগ করে ভারতে যান।
এরপর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয় এবং বর্তমানে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই-আগস্টের আন্দোলন দমনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া চলছে।