সম্প্রতি চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাওয়া ব্যক্তি মোবাইল চোর নন, বরং বিদেশে লোক পাঠানোর বিরোধের জেরে তাকে হেনস্তা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী মতিউর রহমান (৪০) নিজেই বাদী হয়ে সোমবার (১৯ মে) রাতে সান্তাহার রেলওয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মতিউর রহমানের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার পারইল গ্রামে। তিনি পেশায় একজন অটোরিকশা চালক হলেও গত দেড় বছর ধরে সৌদি আরবে লোক পাঠানোর কাজ করছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (১৮ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার নশরৎপুর স্টেশনে বগুড়া থেকে সান্তাহার অভিমুখী একটি কমিউটার ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মতিউরকে ট্রেনের জানালায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং ট্রেন প্লাটফর্মে আসার পর তাকে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়া হলে তিনি ট্রেনের নিচে চলে যান। এরপর তাকে মোবাইল চোর ভেবে উৎসুক জনতা মারধর করে।
তবে মতিউরের পরিবারের অভিযোগ, তিনি মোবাইল চোর নন। ২০ দিন আগে বগুড়ার আদমদিঘি উপজেলার তালশান গ্রামের মোহাম্মদ হেলালের ছেলে সজীব হোসেনকে সাড়ে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সৌদি আরবে পাঠিয়েছিলেন মতিউর। সৌদি আরবে গিয়ে সজীবের বৈধ কাগজপত্র পেতে দেরি হওয়ায় তার পরিবারের সদস্যরা সাত-আট দিন আগে মতিউরের বাড়িতে গিয়ে কাগজপত্র নিয়ে জানতে চায় এবং এ নিয়ে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
মতিউরের ছেলে আহসান হাবিব জানান, এরই জের ধরে বগুড়া থেকে ট্রেনে ফেরার পথে সজীবের ছোট ভাই রাকিব এবং সজীবের শ্যালকরা তার বাবাকে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় তার বাবা প্রায় চার-পাঁচ মিনিট ট্রেনের সঙ্গে ঝুলে ছিলেন। তাদের কাছে থাকা ব্যবসায়িক কাজের ৫০ হাজার টাকাও কেড়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। ট্রেনটি নশরৎপুর স্টেশনে পৌঁছালে প্লাটফর্মের ধাক্কা খেয়ে তার বাবা নিচে পড়ে যান এবং উৎসুক জনতা তাকে মোবাইল চোর ভেবে মারধরও করে। অল্পের জন্য তিনি ট্রেনে কাটা পড়েননি।
পরে মতিউরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সান্তাহার রেলওয়ে থানা এর ওসি হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, নসরতপুর রেলস্টেশনের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মামলায় আদমদীঘির ডহরপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুমনকে নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ছয়-সাতজনকে আসামি করা হয়েছে।