আবু সাঈদ বেঁচে থাকলে কি তার মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা করতে দিতেন? - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে আগুন দিয়েছে দিল্লিপন্থিরা: আলোচনা সভায় অভিযোগ মাওলানা আতাউর রহমান বিক্রমপুরী গ্রেপ্তার, কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো ১৮ বছর পর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান, ঢাকায় স্মরণকালের বড় সংবর্ধনার প্রস্তুতি বিএনপির ২৯ ঘণ্টায় ৪৭ লাখ টাকা সংগ্রহ, আর অনুদান নেবেন না ডা. তাসনিম জারা তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ঘিরে রাজধানীতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা, মাঠে সোয়াট ও গোয়েন্দা নজরদারি কূটনৈতিক এলাকায় সহিংসতা: ভারতকে কড়া বার্তা বাংলাদেশের রাজবাড়ীতে জমির আইল নিয়ে সংঘর্ষ, কৃষকের মৃত্যু ডিমের চরের নিরব কান্না ও নীল অর্থনীতির ভবিষ্যত ‎একটি ক্যাম্পাস, নয়টি স্বপ্নপূরণ শেকৃবিতে মাদকের আগ্রাসন বৃদ্ধি: প্রশাসনের নীরবতায় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

আবু সাঈদ বেঁচে থাকলে কি তার মূর্তি নিয়ে শোভাযাত্রা করতে দিতেন?

ডেস্ক নিউজ
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ, ২০২৫
  • ৯৯ বার দেখা হয়েছে
বাংলা নববর্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জুলাই আন্দোলন, শহীদ স্মৃতি, মঙ্গল শোভাযাত্রার ভাস্কর্য, পরিবার বিরোধী, ইসলামী সমালোচনা, আবু সাইদের ফেসবুক পোস্ট, রাজনৈতিক প্রতীক, সংস্কৃতি, সমাজের মতামত, ধর্মীয় মতবাদ, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ইউনেসকো, ধর্মীয় সমালোচনা, প্রগতিশীল আন্দোলন,মঙ্গল শোভাযাত্রার বিতর্ক.আবু সাইদ
ছবি: ফেসবুক

বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ প্রতিবছর আয়োজন করে ঐতিহ্যবাহী মঙ্গল শোভাযাত্রা।

এবারের আয়োজনে মূল আকর্ষণ হিসেবে থাকছে জুলাই আন্দোলনের শহীদ আবু সাইদের ২০ ফুট দীর্ঘ ভাস্কর্য।

তবে পরিবার এই উদ্যোগকে ভালোভাবে নেয়নি এবং তারা এটিকে ধর্মীয় ও নৈতিকভাবে অনুচিত বলে মনে করছেন।

ভাস্কর্য নির্মাণের পক্ষে চারুকলা অনুষদ

চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় চারটি বড় ভাস্কর্য থাকছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো শহীদ আবু সাইদের ২০ ফুট দীর্ঘ ভাস্কর্য।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, এতে আবু সাইদের বুক টান করে দাঁড়ানো, দুই হাত প্রসারিত দৃশ্য ফুটিয়ে তোলা হবে, যা তার জুলাই আন্দোলনের অকুতোভয় অবস্থানকে চিত্রায়িত করবে।

পরিবারের আপত্তি ও আহ্বান

তবে শহীদ আবু সাইদের পরিবার এ নিয়ে গভীর আপত্তি জানিয়েছে।

ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণ অনুচিত উল্লেখ করে তারা বলেছেন,

“তাদের ছেলে কোনো রাজনৈতিক প্রতীক বা প্রতিক্রিয়ার অংশ হোক, এটা তারা চান না।

শহীদের বাবা দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন:

“আপনারা যারা আবু সাইদের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে তার ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন, আমরা আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে আমাদের আকুল আবেদন, আমাদের ছেলের জন্য দোয়া করুন এবং তার স্মরণে এমন কিছু করুন যা সত্যিকারের জনকল্যাণে আসবে।”

আরও পড়ুনঃ 

আবু সাইদের দৃষ্টিভঙ্গি: তার পুরনো পোস্ট কী বলছে?

শহীদ আবু সাইদের এক পুরনো ফেসবুক পোস্টে দেখা যায়, তিনি প্রতীকি ও লোক দেখানো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ছিলেন।

তিনি লিখেছিলেন:

“যখন ভারত চাঁদে নভোযান পাঠায়, আমেরিকা মঙ্গল গ্রহে পাঠায় মানুষ, ঠিক তখনই কোন এক বেকুবের দল নাকি একবার লক্ষ কন্ঠে জাতীয় সংগীত গায়, একবার লম্বা পতাকা বানায়, এবার নাকি রাস্তায় আল্পনা এঁকে বিশ্ব রেকর্ড গড়ে!
হেরা নাকি আবার মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে হুতুম পেঁচাও নাচায়! আর নিজেকে দাবি করি প্রগতিশীল।”

তার এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, তিনি লোক দেখানো সংস্কৃতির বিপক্ষে ছিলেন এবং কার্যকর পরিবর্তন চাননি।

অথচ, এখন তার নামেই মঙ্গল শোভাযাত্রায় বিশাল ভাস্কর্য তৈরি করা হচ্ছে, যা তার নিজস্ব অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

মঙ্গল শোভাযাত্রার ঐতিহ্য ও বিতর্ক

১৯৮৯ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে পহেলা বৈশাখে মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছে।

২০১৬ সালে ইউনেসকো একে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।

কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই ইসলামী দলগুলো ও কিছু মহল এটিকে ধর্মবিরোধী বলে সমালোচনা করে আসছে। এবার আবু সাইদের পরিবারও এই সমালোচনার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করল।

আরও পড়ুনঃ 

প্রশ্ন রয়ে গেলো…

শহীদ আবু সাইদের নাম ব্যবহার করে তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিপন্থী কিছু করা কতটা নৈতিক?

যদি তিনি নিজেই প্রতীকি আন্দোলনের বিপক্ষে থাকেন, তাহলে তার নামে প্রতীক নির্মাণের যৌক্তিকতা কী?

তবে এক পক্ষ বলছে, আবু সাইদ আমাদের সাহসের প্রতীক, তার চেতনা ধরে রাখতে এই ভাস্কর্য জরুরি।

আবার অন্য পক্ষের মতে, এটি তার পরিবার ও তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির অবমাননা।

এখন দেখার বিষয়—চারুকলা অনুষদ কি এই বিতর্কের পরও ভাস্কর্য নির্মাণ চালিয়ে যাবে, নাকি পরিবারের দাবিকে গুরুত্ব দেবে?

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT