দীর্ঘ বারো বছর পার হলেও রানা প্লাজা ধসের ঘটনার অধিকাংশ মামলার এখনো নিষ্পত্তি হয়নি এবং দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত গার্মেন্টস শ্রমিক ও তাদের পরিবাররা এখনো পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ করেছে বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ঘটে যাওয়া সেই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ১,১৩৮ জন শ্রমিক নিহত হন এবং আহত হন আরও প্রায় ১,৭৬৯ জন—যাদের অধিকাংশই ছিলেন নারী ও তরুণ।
ব্লাস্টের প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, এই ঘটনায় দায়ের হওয়া ১১টি শ্রম (ফৌজদারি) মামলার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক এখনও বিচারাধীন রয়েছে। চারটি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রক্রিয়া চলছে, চারটি পত্রিকায় নোটিশ প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে এবং বাকি তিনটি মামলার তারিখ এখনো কজলিস্টে হালনাগাদ হয়নি।
তাছাড়া দায়রা আদালতে বিচারাধীন তিনটি মামলার মধ্যে একটি হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত, বাকি দুটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে—যেখানে ইতোমধ্যে ৯৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে এবং পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ১৯ মে ধার্য করা হয়েছে।
ব্লাস্ট জানায়, শ্রম আইনে নিহতদের জন্য নির্ধারিত ২ লাখ এবং আহতদের জন্য আড়াই লাখ টাকার ক্ষতিপূরণ বর্তমান বাস্তবতায় একেবারেই অপ্রতুল। সংগঠনটি আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের হার পুনর্নির্ধারণ, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এবং পরিবারগুলোর দীর্ঘমেয়াদী সহায়তার ওপর জোর দিয়েছে।
এছাড়াও ব্লাস্ট রানা প্লাজার ঘটনায় দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা, গণমাধ্যমে অগ্রগতি প্রতিবেদন প্রকাশ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং জুরাইন কবরস্থানে নিহতদের নাম সংবলিত একটি স্থায়ী স্মৃতিফলক স্থাপনসহ ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে।