নোটিশ:

টিউলিপ সিদ্দিকের সম্পদ জব্দের উদ্যোগ যুক্তরাজ্যে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১১২ বার দেখা হয়েছে
টিউলিপ সিদ্দিক আর্থিক লেনদেন ও বাংলাদেশের হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি।
টিউলিপ সিদ্দিকের অর্থ আত্মসাতের

যুক্তরাজ্যের সাবেক ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক (Tulip Siddiq) স্বৈরাচারী খালা শেখ হাসিনার সঙ্গে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত।  দুদক জানিয়েছে যুক্তরাজ্যে টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তহবিল জব্দ করবে। এ তহবিল বিশ্বব্যাপী অর্থপাচারের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা সক্রিয়ভাবে এই অর্থ দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছেন। দুদক কর্মকর্তার অভিযোগ অনুযায়ী তার খালা শেখ হাসিনার শাসনামলে আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুদক-এর মহাপরিচালক আখতার হোসেন জানিয়েছেন টিউলিপ সিদ্দিকসহ শেখ হাসিনার পরিবারের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে এবং এতে একাধিক দেশ জড়িত।

তারা যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরও জানান – “আমরা এখনও যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য বিদেশি সূত্র থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করছি।” দুদক এর প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে যে পাচারকৃত অর্থ শুধু যুক্তরাজ্যেই নয় বরং একাধিক গন্তব্যে স্থানান্তরিত হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (BFIU) একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির সহায়তায় এ তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

প্রায় এক মাস আগে সিটি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। এখনও তার আর্থিক লেনদেন ও বাংলাদেশের হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তদন্তের মুখোমুখি। প্রধানমন্ত্রীর নৈতিকতা উপদেষ্টা স্যার লরি ম্যাগনাসের তদন্তে উঠে আসে যে তিনি আওয়ামী লীগের এক সহযোগীর উপহার দেওয়া ফ্ল্যাট সম্পর্কে অনিচ্ছাকৃতভাবে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করেছিলেন। এরপর তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

শেখ হাসিনার পতন ও স্বৈরাচারী শাসনের অভিযোগ:

গত আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের দীর্ঘতম সময়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তার শাসনামলে ব্যাপক দমন-পীড়নের অভিযোগ ওঠে। এ সময় ১,৫০০ জন বিক্ষোভকারীর হত্যাকাণ্ড এবং বিচারবহির্ভূত আটক থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ, গ্রেপ্তার এবং গোপন বন্দিত্বের মাধ্যমে তার শাসনকাল দমনমূলক হয়ে ওঠে।

শুধু বিদেশ নয় দেশেও টিউলিপ সিদ্দিকী ও তার পরিবারের বেশ অবৈধভাবে অর্জিত সম্পত্তি রয়েছে বলে অভিযোগ আছে। এ সম্পর্কিত একটি নিউজ দেয়া হয়েছিল দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এ:
https://dailysabasbd.com/tulips-territory/

টিউলিপ সিদ্দিক ও পরিবারের মেগা দুর্নীতি:

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা চলছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগটি রাশিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি থেকে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড আত্মসাতের। এই মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্য, যার মধ্যে টিউলিপ সিদ্দিকও রয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।

বাংলাদেশি তদন্তকারীরা যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির সহায়তায় কাজ করছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কয়েকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। হোসেন আরও জানান, “ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যসহ একাধিক দেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো পাচার হওয়া অর্থ ফেরানোর বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।” বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ১০-১২টি দেশের কাছে তদন্তের জন্য তথ্য চেয়েছে, তবে কোন কোন দেশ সরাসরি সহযোগিতা করছে, তা স্পষ্ট নয়। পারস্পরিক আইনি সহায়তা ও অনুরোধ অনুসরণ করা হচ্ছে যাতে আত্মসাৎ করা সম্পদ পুনরুদ্ধার করা যায়।

যুক্তরাজ্য থেকে প্রকাশিত টেলিগ্রাফ এ এ সম্পর্কিত একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে-
https://www.telegraph.co.uk/politics/2025/02/09/tulip-siddiq-sheikh-hasina-bangladesh-corruption-treasury/

তবে, টিউলিপ সিদ্দিক এই অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “এই অভিযোগগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। টিউলিপ সিদ্দিকের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি এবং তিনি সম্পূর্ণভাবে এই দাবিগুলো অস্বীকার করেন।”

তদন্ত চলমান থাকলেও, এটি স্পষ্ট নয় যে যুক্তরাজ্যে তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT