ওমানের রাজধানী মাস্কটে আসন্ন ভারত মহাসাগরীয় সম্মেলনের (আইওসি ২০২৫) ফাঁকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এই বৈঠকে বাংলাদেশ এমন বার্তা দিতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্কে অস্বস্তি কমানোর লক্ষ্যে সহায়ক হবে।বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের মধ্যে মাস্কটের এই বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত ছয় মাসে সীমান্ত উত্তেজনা, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা, ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা ও শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বিতর্ক দুই দেশের সম্পর্কে দূরত্ব বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ এসব ইস্যুতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং ভারতের ভূমিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
সম্মেলনটি আগামী ১৬-১৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি ভারতের নয়াদিল্লিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ও ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ সহযোগিতায় আয়োজিত হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নেবে: আসিফ মাহমুদ
যদি মাস্কটে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, তবে এটি হবে গত পাঁচ মাসের মধ্যে তৌহিদ হোসেন ও এস জয়শঙ্করের দ্বিতীয় দফা আলোচনা। এর আগে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় নিউইয়র্কে তাঁদের প্রথম বৈঠক হয়েছিল, যেখানে পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দুই দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি গত ডিসেম্বরে ঢাকা সফর করেন এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিনসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের সাম্প্রতিক টানাপোড়েনের মধ্যে মাস্কটের এই বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। গত ছয় মাসে সীমান্ত উত্তেজনা, বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা, ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণা ও শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বিতর্ক দুই দেশের সম্পর্কে দূরত্ব বাড়িয়েছে। বাংলাদেশ এসব ইস্যুতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং ভারতের ভূমিকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাস্কটের বৈঠকে ঢাকা ভারতকে স্পষ্ট বার্তা দেবে যে, তাদের ভূখণ্ড যেন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য ব্যবহার না হয় এবং শেখ হাসিনা যেন ভারত থেকে বাংলাদেশবিরোধী কার্যক্রম চালাতে না পারেন। একইসঙ্গে সীমান্ত হত্যা বন্ধ, সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের মাধ্যমে উত্তেজনা সৃষ্টি না করা এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ বরাবরই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সম্পর্ক যাতে আরও অবনতি না হয়, সে বিষয়ে মাস্কটের বৈঠকে নয়াদিল্লিকে বার্তা দেবে ঢাকা।
Leave a Reply