বিচারকদের সম্পদের হিসাব সংগ্রহ ও পর্যালোচনার জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল তিন বছর পরপর এবং অবসরের ছয় মাস আগে তাদের ও তাদের পরিবারের ওপর নির্ভরশীল সদস্যদের সম্পদের বিবরণ গ্রহণ করবে। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এ সংক্রান্ত সুপারিশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বিচারকদের সম্পদের হিসাব নেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিচারিক দক্ষতা, আদালত ও মামলা ব্যবস্থাপনা, আইনজীবী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আচরণ পর্যবেক্ষণ করবে কাউন্সিল। এছাড়া, বিচারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহণ, পর্যালোচনা ও প্রয়োজনে তদন্ত পরিচালনার জন্য কাউন্সিল একটি স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হলে যথাযথ শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যার মধ্যে সতর্কবার্তা প্রদান ও গুরুতর ক্ষেত্রে ‘বিচারপতি’ পদবি ব্যবহার থেকে নিষিদ্ধ করার সুপারিশ রয়েছে।
গত শনিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওয়েবসাইটে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বে আট সদস্যের এ কমিশন গঠিত হয় ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর। ৩৫২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ৩১টি অধ্যায়ে বিচার বিভাগ সংস্কারের বিভিন্ন সুপারিশ ও প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে।
এদিকে, বিচার বিভাগের সংস্কারের এই উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা স্বাগত জানিয়েছেন এবং এটিকে বিচারিক স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। তারা বলেন, বিচারকদের সম্পদের হিসাব নেওয়া এবং তাদের কর্মদক্ষতা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বাড়বে এবং জনগণের আস্থা ফিরে আসবে।
বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদালতের কার্যক্রম আরও গতিশীল এবং কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন নতুন দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে যে স্থায়ী ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে, তাতে বিচারকদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ দ্রুত সমাধান এবং বিচার বিভাগের নৈতিকতা আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply