আগামী ২৫ থেকে ২৯ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের ভারত সফর বাতিল করা হয়েছে। ফলে প্রস্তাবিত দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনা আপাতত স্থগিত হয়ে গেছে। বিষয়টি এনডিটিভি প্রফিট সূত্রে পাওয়া খবর জানিয়েছে। বাতিলের কারণে ২৭ আগস্ট থেকে ভারতীয় পণ্যের ওপর প্রযোজ্য অতিরিক্ত শুল্ক স্থগিত বা প্রত্যাহারের সম্ভাবনাও আপাতত স্থগিত রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি আগস্টে ভারতের কিছু পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। রাশিয়ার তেল আমদানির শাস্তি হিসেবে এ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। ২৭ আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকর হলে কিছু ভারতীয় পণ্যের ওপর তা ৫০ শতাংশে উন্নীত হওয়ার কথা ছিল। এটি যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যে সর্বোচ্চ হারগুলোর মধ্যে একটি।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম দাবি ছিল ভারতের বিশাল কৃষি ও দুগ্ধ খাত উন্মুক্ত করা। কিন্তু ভারত এ বিষয়ে একেবারে অনড় ছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট জানিয়েছেন, দেশের কৃষক ও মজুরদের স্বার্থ রক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, “ভারতের কৃষক ও মজুরদের কল্যাণ আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।”
রয়টার্সের সংবাদ অনুযায়ী, বাণিজ্য আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট ভারতকে “অনমনীয়” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, অক্টোবরের মধ্যে বড় ধরনের বাণিজ্য চুক্তি সম্ভব হতে পারে। তবে কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানানো হয়, ভারতের পক্ষ থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য ছাড় দেওয়ার পরিকল্পনা নেই। এছাড়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও প্রধানমন্ত্রী মোদির মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ না হওয়াও চুক্তি স্থাপনের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার পণ্য কেনা চালিয়ে যাচ্ছে, অথচ রাশিয়ার তেল কেনার জন্য ভারতকে আলাদা শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ভারতের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি সরাসরি ফোনে আলোচনায় যেতে চাননি, যাতে একতরফা চাপের শিকার না হন।
এই পরিস্থিতিতে, বাণিজ্য চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের যোগাযোগ চলমান আছে। খবর পাওয়া যায়, আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী মোদি যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দুই দেশের মধ্যে চূড়ান্ত সমঝোতা ছাড়া বাণিজ্য আলোচনার পুনঃসূচনা কঠিন হবে।