যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি নির্বাহী আদেশে এইচ-ওয়ানবি (H-1B) ভিসার জন্য বার্ষিক ১ লাখ ডলার ফি আরোপ করেছেন। আগের ২১৫ ডলারের ফি থেকে এটি একটি বিশাল বৃদ্ধি। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হলো বিদেশি কর্মীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং আমেরিকান কর্মীদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়তা করা।
ফি বৃদ্ধি: এইচ-ওয়ানবি ভিসার জন্য নতুন ফি হবে ১ লাখ ডলার বার্ষিক, যা আগের ২১৫ ডলার থেকে অনেক বেশি
প্রভাবিত খাত: প্রধানত প্রযুক্তি খাত, যেখানে ভারতীয় কর্মীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ, এই ফি বৃদ্ধির ফলে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে।
ফি পরিশোধের দায়িত্ব: এই ফি মূলত নিয়োগকর্তাদের ওপর আরোপিত হবে, তবে কিছু ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের ওপরও প্রভাব পড়তে পারে।
ব্যতিক্রম: জাতীয় স্বার্থে কিছু ক্ষেত্রে এই ফি মওকুফ করা হতে পারে, তবে তা নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে।
এইচ-ওয়ানবি ভিসার পাশাপাশি, ট্রাম্প প্রশাসন নতুন দুটি ভিসা প্রোগ্রাম চালু করেছে:
গোল্ড কার্ড ভিসা: যারা কমপক্ষে ১ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবেন, তারা দ্রুত আমেরিকান স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার সুযোগ পাবেন।
প্লাটিনাম কার্ড ভিসা: যারা ৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেবেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রে ২৭০ দিন পর্যন্ত অবস্থান করতে পারবেন, তবে বিদেশি আয় থেকে মার্কিন কর থেকে অব্যাহতি পাবেন।
এই পদক্ষেপগুলো সমালোচকদের মতে, অভিবাসন নীতি পরিবর্তন করে ধনী ব্যক্তিদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করছে এবং দক্ষ কর্মীদের জন্য সুযোগ সংকুচিত করছে। অন্যদিকে, সমর্থকরা মনে করেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চমানের প্রতিভাবানদের আগমন বাড়বে।
এই পরিবর্তনগুলো আগামী ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে কার্যকর হবে এবং এর প্রভাব প্রযুক্তি খাত, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে সুস্পষ্ট হতে পারে।
H-1B ভিসার সমালোচকরা, যারা বলছেন এই ভিসাগুলো আমেরিকান কর্মীদের জায়গা নিচ্ছে, তারা এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। U.S. Tech Workers গ্রুপ বলেছে, এটি প্রায় ভিসা বাতিলের সমান।
বাইডেন প্রশাসনের সাবেক সিনিয়র কর্মকর্তা ডগ র্যান্ড, বলেন, “ফি বৃদ্ধি ‘অবৈধ ও অযৌক্তিক’। এটি বাস্তব নীতি নয়, বরং অভিবাসন নীতিপ্রতিবাদীদের জন্য শো”। H-1B ভিসা লটারির মাধ্যমে বিতরণ করা হয়। এই বছর অ্যামাজন সবচেয়ে বেশি (১০,০০০+) H-1B ভিসা পেয়েছে, এরপর টাটা কনসালটেন্সি, মাইক্রোসফট, অ্যাপল ও গুগল। ভূগোলিকভাবে, ক্যালিফোর্নিয়ায় H-1B কর্মীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
সমালোচকরা বলছেন, H-1B ভিসার সুযোগ প্রায়শই এন্ট্রি-লেভেল চাকরিতে যায়, যেখানে বিশেষ দক্ষতা প্রয়োজন। কোম্পানিগুলো অনেক সময় কম খরচে বিদেশি কর্মী নিয়োগ করে, এমনকি উচ্চ অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও কম দক্ষতার পদে। ফলে, আমেরিকান কোম্পানিগুলো Wipro, Infosys, HCL Technologies, Tata, IBM, Cognizant-এর মতো সংস্থা থেকে বিদেশি কর্মী চুক্তিভিত্তিকভাবে নেয়।
মেলানিয়া ট্রাম্পও ১৯৯৬ সালে H-1B ভিসা পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মডেল হিসেবে কাজ করেছিলেন।