বিল রেইনসের মতে, ট্রাম্প গত ৪০ বছর ধরে বিশ্বাস করে আসছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্যে প্রতারণার শিকার হচ্ছে। তিনি বিশ্ব বাণিজ্যকে ১৯৪৪ সালের মতো পুনর্গঠন করতে চান এবং সকল দেশকে সমঝোতার টেবিলে আনার চেষ্টা করছেন। ১৯৪৪ সালে নিউ হ্যাম্পশায়ারে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে নতুন অর্থনৈতিক কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছিল।
বিশ্বের শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীনের পণ্যে, আর চীনও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এই শুল্কের ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ব্যাপক প্রভাবিত হচ্ছে এবং মার্কিন বাজারেও অন্ধনীতি প্রভাব ফেলছে। শেয়ার বাজারের দরপতন এবং বিনিয়োগকারীদের হতাশা বাড়ছে, তবে কোনো পক্ষই সমঝোতার প্রস্তাব দিতে আগ্রহী নয়। দুই দেশই একে অপরকে সমঝোতার জন্য চাপ দিচ্ছে, তবে অগভীর আলোচনা চলছে বলে জানা যাচ্ছে।
বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন কিছু নয়। এর আগে ব্রিটেন-চীন, যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ হয়েছে, যার পর বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, বাণিজ্য যুদ্ধ প্রতিযোগিতা বাড়াতে এবং দেশীয় পণ্যের উৎপাদন ও বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।
ট্রাম্পের উদ্দেশ্য হলো, তিনি জানেন ব্যবসা করতে হলে ঝুঁকি নিতে হয়। বাড়তি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। ট্রাম্পের শীর্ষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা স্টিফেন মিরানও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যেখানে শুল্কারোপ একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
চীন, অবশ্য, এই শুল্কযুদ্ধে পিছু হটছে না। তারা ঘোষণা করেছে যে, তারা ট্রাম্পের শুল্কের মোকাবিলা করবে এবং শুল্ক যুদ্ধকে শুধু সংখ্যার খেলায় পরিণত করবে। চীনা নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তারা আত্মসমর্পণ করবে না। চীন ইতিমধ্যে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা শুরু করেছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে।
চীনের বিপুল পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হলেও, শুল্ক আরোপের কারণে চীনা প্রশাসন আশাবাদী যে, এটির প্রভাব তাদের ওপর কম পড়বে। চীনা সরকার ইতিমধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে চুক্তি করার উদ্যোগ নিয়েছে। ট্রাম্পের শুল্কের ফলে বৈদ্যুতিক পণ্য প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর জন্য সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তবে মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে যে, বৈদ্যুতিক পণ্যের ওপর কোনো শুল্ক চাপানো হবে না।
এদিকে, চীনের শুল্ক নীতির প্রতি তাদের দৃঢ় অবস্থান চলমান। চীন তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে।