লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরকে ঘিরে বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ট্রাম্পবিরোধী শ্লোগান দেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে।
বিক্ষোভের আয়োজক সংগঠন ‘স্টপ ট্রাম্প কোয়ালিশন’ দুপুরে ম্যারিলিবোনের পোর্টল্যান্ড প্লেসে সমবেত হয়ে মিছিল নিয়ে পার্লামেন্ট স্কয়ারের দিকে অগ্রসর হয়। বিকেলে লন্ডনের বিভিন্ন স্থানে আরও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজকরা জানান, অন্তত ৫০টিরও বেশি সংগঠন এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। গণমাধ্যমের হিসাব অনুযায়ী প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ ট্রাম্পের সফরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন।
মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, জনশৃঙ্খলা রক্ষায় ১,৬০০-এর বেশি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়, যার মধ্যে অন্যান্য বাহিনী থেকেও অতিরিক্ত ৫০০ জন যোগ দেন। পুলিশ কর্তৃপক্ষ আইন অনুযায়ী শর্ত আরোপ করে জানায়, সব সমাবেশ অবশ্যই সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে শেষ করতে হবে।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, লন্ডন এমন একজন নেতাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিচ্ছে যিনি দেশে ও বিশ্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত। এ সময় উইন্ডসর ক্যাসেলের বাইরে ট্রাম্প ও জেফরি এপস্টেইনের সম্পর্কিত একটি ভিডিও আলোকপ্রক্ষেপণ করা হলে চারজনকে আটক করে পুলিশ।
অন্যদিকে, রাজকীয় অভ্যর্থনার অংশ হিসেবে ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পকে উইন্ডসর ক্যাসেলে স্বাগত জানান রাজা চার্লস তৃতীয় ও রানি ক্যামিলা। প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম ও প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটনও তাদের অভ্যর্থনায় অংশ নেন। পরে সামরিক কুচকাওয়াজ, রাজকীয় ভোজসহ নানা অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।
সফরে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির কথাও উঠে আসে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি খাতের কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠান যুক্তরাজ্যে প্রায় ৩১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে, যা এআই, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ নতুন প্রযুক্তি খাতে কাজে লাগবে।
রাজকীয় জমকালো আয়োজন সত্ত্বেও লন্ডনের রাস্তায় বিক্ষোভ দেখিয়ে সাধারণ মানুষ জানান দিলেন— ট্রাম্পের সফর শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, মানবাধিকার ও নীতির প্রশ্নও উত্থাপন করছে।