দীর্ঘদিনের প্রতারণা, নির্যাতন ও ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে ফের আলোচনায় উঠেছেন কনটেন্ট ক্রিয়েটর তৌহিদ আফ্রিদি ও তার বাবা নাসির উদ্দিন সাথী। সাম্প্রতিক সময়ে ‘ক্রাইম এডিশন’ প্রকাশিত এক ভিডিও প্রতিবেদনে তাদের নানা অনিয়ম ও কেলেঙ্কারির বিষয় উঠে এসেছে। এতে মুনিয়ার সঙ্গে আফ্রিদির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, নারীদের প্রতারণা ও হত্যার হুমকির অভিযোগসহ একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের সময় আফ্রিদি দেশের জনপ্রিয় ইউটিউবার ও ব্লগারদের আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজে লাগাতে হুমকি দিয়েছিলেন। এছাড়া একাধিক নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়ানোর অভিযোগও প্রকাশ পায়। অভিযোগকারীদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী জানান, “দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর আফ্রিদি হঠাৎ করেই আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। পরে আমাকে ডিবি অফিসে ডেকে গায়েব করে দেওয়ার হুমকি দেয়। ফলে সংসার করার স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় আমার।”
ওই নারী আরও বলেন, “আমি জানতে পারি, বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে তার সম্পর্ক আছে। মুনিয়া নামের একটা মেয়ে আছে, তার সঙ্গেও আফ্রিদির সম্পর্ক। এগুলো জেনে ওর সাথে আমি একটু রাগারাগি করি। এটা স্বাভাবিক, আমার একটু খারাপ লাগতেই পারে। আমি যেহেতু ওকে ভালোবেসে ফেলেছি। তো, ওকে আমি বলার পরে খুব বাজেভাবে রিঅ্যাক্ট নেয়। এক সময় এরকমও বলে, মুনিয়ার যেরকম অবস্থা হয়েছে, আমারও ঠিক সেরকম অবস্থা হবে। মানে, ইনডিরেক্টলি ও আমাকে হত্যার হুমকিই দেয়।”
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই নারীর অভিযোগের সূত্র ধরে কিছু ফোনালাপ হাতে আসে। সেসব রেকর্ডিংয়ে মুনিয়ার বাসায় আফ্রিদির যাতায়াত ও ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ মেলে। একটি ফোন কলে শোনা যায়, মুনিয়া বলছেন—“বলছে রসকস থাকবে না।” তখন আফ্রিদি বলেন—“ওর রস-কস থাকবে না বিয়ের পর। বিয়ের আগেই রস.. বিয়ের পরের।” আরেক কথোপকথনে মুনিয়া আফ্রিদিকে জিজ্ঞেস করেন—“কোথায় তুমি, কি করো?” জবাবে আফ্রিদি বলেন—“এই যে, আমি রাত্রে বেলার মধ্যে আসতেছি।” তখন মুনিয়া বলেন—“ও, কোথায় আসবা?” আফ্রিদি জবাব দেন—“তোমাকে পিক করবো রাতে।”
অন্য একটি ফোন কলে মুনিয়া বলেন—“আজকে দেখা করবা না আমার সাথে একটু?” উত্তরে আফ্রিদি বলেন—“রাতে রাতে।” আরও এক কথোপকথনে আফ্রিদি স্বীকার করেন তিনি “ড্রাংক” ছিলেন, তবুও মুনিয়ার কাছে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। মুনিয়া তখন তাকে মজা করে বলেন—“কাইকাবা গাঁধা কোথাকার!” জবাবে আফ্রিদি বলেন—“গাঁধা কেন? আমি ন্যাচারালি কথা বলি।” এরপর তিনি আশ্বাস দেন রাতে দেখা করতে আসবেন।
তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে বর্তমানে দুটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে—জুলাই আন্দোলনে আসাদুল হক বাবু নামে এক বিক্ষোভকারীকে হত্যার পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে তিনি জড়িত। অন্য মামলা হয়েছে বাড্ডা থানায়। এজাহারে বলা হয়েছে—২০২৪ সালের ২০ জুলাই মধ্য বাড্ডা ফ্লাইওভারের নিচে আফ্রিদি অবৈধ অস্ত্র দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালান।