শেয়ারবাজারে কারসাজি ঠেকাতে দ্বিগুণ শাস্তির প্রস্তাব, নিয়োগেও আসছে স্বচ্ছতা - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী সাবেক সেনাকর্মকর্তার জবানিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর প্রকৃত চিত্র কাতার–সৌদি মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত ‘আপাতত স্থগিত’ করল আফগানিস্তান পাকিস্তান আবারও আফগান সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে আফগান বাহিনী জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বালিয়াকান্দিতে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক কুবির তিন শিক্ষার্থী নোবিপ্রবি মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্সে পুরস্কার জয়ী রাজবাড়ীর কালুখালীর গুণী সংগীতশিল্পী জাহিদ হাসানের মৃত্যু

শেয়ারবাজারে কারসাজি ঠেকাতে দ্বিগুণ শাস্তির প্রস্তাব, নিয়োগেও আসছে স্বচ্ছতা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় শনিবার, ২ আগস্ট, ২০২৫
  • ৯৩ বার দেখা হয়েছে

শেয়ারবাজারে কারসাজি রোধ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আইন, ২০২৫-এর খসড়ায় বড় ধরনের সংস্কার আনা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে শেয়ার কারসাজির শাস্তি দ্বিগুণ করার পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ সম্প্রতি খসড়া আইনটি মতামতের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থায় পাঠিয়েছে। খসড়ায় বলা হয়েছে, কেউ যদি প্রতারণামূলক কার্যক্রম, সুবিধাভোগী ব্যবসা, বাজার কারসাজি বা অসদুপায়ে সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে অন্যকে প্ররোচিত করেন, তবে তা শেয়ার কারসাজি হিসেবে গণ্য হবে।

বর্তমানে এ ধরনের অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ৫ লাখ টাকা জরিমানা। খসড়ায় শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার প্রস্তাব করা হয়েছে। এছাড়া একাধিক ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের আর্থিক ক্ষতির জন্য পৃথক পৃথক শাস্তির বিধান সংযোজন করা হয়েছে।

তবে শাস্তির মাত্রা বাড়ানোই যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও আইসিবির সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবু আহমেদ বলেন, “শেয়ার কারসাজিতে জড়িতরা আইনের ফাঁকফোকর ভালোই জানে। শুধু কঠোর শাস্তি দিলেই তারা থেমে যাবে না। বরং বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও সংহত নীতিমালা প্রয়োজন।”

তিনি আরও বলেন, “বিনিয়োগকারীরা যখন নিজের টাকায় না খেলে এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে মার্জিন লোন নেয়, তখন দুর্বল কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় মার্জিন লোন সীমিত করা দরকার। একইসঙ্গে প্লেসমেন্ট শেয়ার প্রথা বাতিল করে গুণগত মানসম্পন্ন মিউচুয়াল ফান্ডে কমিশনের সুবিধা বাড়াতে হবে, যাতে ভালো কোম্পানির শেয়ারে চাহিদা সৃষ্টি হয়।”

খসড়া আইনে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের নিয়োগেও বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে। বর্তমানে সরকার সরাসরি এসব পদে নিয়োগ দিয়ে থাকে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, একটি স্বাধীন বাছাই কমিটি নিয়োগের জন্য প্রার্থী বাছাই করবে। ওই কমিটির সভাপতি থাকবেন প্রধান বিচারপতির মনোনীত আপিল বিভাগের একজন বিচারপতি। সদস্য হিসেবে থাকবেন মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব। বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বোর্ড সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।

বাছাই কমিটি প্রতিটি পদের জন্য দুজন করে প্রার্থীর নাম সুপারিশ করবে, যেখান থেকে সরকার একজনকে নিয়োগ দেবে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদমর্যাদা, বেতন ও অন্যান্য সুবিধা যথাক্রমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকের সমতুল্য হবে।

প্রস্তাবিত আইনটি অনুমোদনের পর তা কার্যকর হলে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিনের অস্বচ্ছতা, কারসাজি ও প্রভাবশালী চক্রের দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, আইনের পাশাপাশি এর বাস্তব প্রয়োগ ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT