বাংলাদেশের বিশিষ্ট আলোকচিত্রী, লেখক এবং এক্টিভিস্ট শহিদুল আলম গাজা অভিমুখী মানবিক নৌবহর ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন–এর সঙ্গে যাত্রা করে ইসরায়েলি নৌবাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।
“আমি শহিদুল আলম, বাংলাদেশ থেকে আসা একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। যদি আপনারা এই ভিডিওটি দেখে থাকেন, তবে বুঝবেন আমরা সমুদ্রে অবরুদ্ধ হয়েছি এবং আমাকে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী অপহরণ করেছে। এই রাষ্ট্র গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সক্রিয় সহযোগিতায়। আমি আমার সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের আহ্বান জানাই, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য লড়াই চালিয়ে যান।”
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স (X)–এ দেওয়া এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়,
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের এই অভিযানে ‘কনশানস’ (Conscience) নামের নৌযানসহ নয়টি নৌকা ছিল। এর মধ্যে কনশানস জাহাজে ছিলেন প্রায় ১০০ জন আন্তর্জাতিক অধিকারকর্মী, সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী। প্রায় দুই সপ্তাহ আগে তারা ইতালি থেকে গাজা অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন।
আয়োজক সংস্থা ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২৫টি দেশের কর্মীরা এই অভিযানে অংশ নেন। তাদের লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের তথাকথিত “অবরোধ” ভেঙে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া এবং গণমাধ্যমের স্বাধীন প্রবেশ নিশ্চিত করা।
এর আগেও, প্রায় এক সপ্তাহ আগে, ইসরায়েলি নৌবাহিনী ‘সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের একটি আলাদা নৌবহর আটক করেছিল। সেখানে থাকা অন্তত ৪০টি নৌযান ও ৪৭৯ জন অধিকারকর্মীকে ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের অনেককে তুরস্ক, গ্রিস ও স্লোভেনিয়ায় পাঠানো হয়। ওই অভিযানে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও ছিলেন বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়।
‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (TMTG)’ নামের এই বৈশ্বিক মানবিক উদ্যোগের আয়োজক ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC), যা একইসঙ্গে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলারও অংশীদার।
বর্তমানে শহিদুল আলমসহ আটক সব যাত্রী ইসরায়েলের একটি বন্দরে রাখা হয়েছে বলে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও ফ্লোটিলা আয়োজকরা বলছেন—এই আটকের কোনো আইনি ভিত্তি নেই এবং এটি মানবিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
সাবাস বাংলাদেশ ঘটনাটির অগ্রগতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং নতুন তথ্য পাওয়া মাত্র আপডেট জানাবে।