
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী শহীদ সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যার বিচার চেয়ে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তারা।
এসময় শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের প্রতি একাত্মতা জানিয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও বিভিন্ন অরাজনৈতিক সংগঠন ও ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীদের হাতে, “আজকে ৪ মাস ২৫ দিন বিচার হবে কবে?; ১৪৫ তম দিনেও কি প্রশাসনের টনক নড়ে না; সাজিদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ কই?; তদন্ত ঠিক কতদূর?; স্যার প্লিজ সন্তান ডাকিয়েন না; ভাইয়ের লাশ কবরে খুনি কেন বাহিরে; শিক্ষার্থীরা আপদ খুনিরা নিরাপদ” ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, প্রশাসন সাজিদ আব্দুল্লাহর হত্যার বিচার নিশ্চিত না করে এটাকে ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করেছে। আমরা দ্রুত সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষকরা বলেন, সাজিদ আব্দুল্লাহ মৃত্যুর ১৪৫ দিন পার হলেও এখনো দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি দেখতে পাইনি। আমাদের কাছে মনে হচ্ছে হত্যাকারীকে আড়াল করার জন্য প্রশাসন এটা ইচ্ছাকৃতভাবে বিলম্ব করছে নয়তো বর্তমান প্রশাসন একটি ব্যর্থ প্রশাসন। প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয়ে থাকে তাহলে তারা এর দায়ভার স্বীকার করুক। আর যদি তারা ইচ্ছাকৃতভাবে করে তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের সকল আন্দোলনে তাদের সাথে যুক্ত হবো।
এসময় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা বলেন, আমরা ন্যায়বিচার চাই। সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। সেই সাথে প্রশাসনকে সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। সাজিদের মতো আমরাও হত্যাকান্ডের শিকার হতে পারি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে উদ্দেশ্যে করে তারা বলেন, ‘আপনারা সিদ্ধান্ত নিন, সিআইডির সাথে কথা বলুন এবং কতদিনে মধ্যে সাজিদের খুনিদের গ্রেফতার করাবেন তার প্রস্তুতি নিন, অথবা আপনারা ক্যাম্পাসের বাহিরে অবস্থান করুন। আপনারা বাংলোতে আরামে থাকবেন, পতাকাবাহী গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন এটা আমরা দেখতে চাই না। সাজিদের খুনিদের কতদিনের মধ্যে গ্রেফতার করবেন সেই প্রস্তুতি নেন, না হলে খারাপ পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকুন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, ডিসেম্বরের ১৭ তারিখের মধ্যে যদি প্রশাসন খুনিদের গ্রেপ্তার করতে না পারে তাহলে আমরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করব।
উল্লেখ্য, সাজিদ আব্দুল্লাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ভিসেরা রিপোর্ট অনুযায়ী ওই শিক্ষার্থীর শ্বাসরোধে হত্যা হয়েছে বলে জানা যায়। পরে তার বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ দেলওয়ার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন এবং মামলাটির তদন্তভার সিআইডি’র নিকট হস্তান্তর করা হয়।