রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মোঃ জিল্লুল হাকিমের চাচাতো ভাই ও আওয়ামী লীগের নেতা এহসানুল হাকিম সাধনের বিরুদ্ধে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। যৌতুকের দাবিতে এ অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত স্ত্রী মোছাঃ মাধুরী হাকিম আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি আমলী আদালতে তিনি মামলাটি দায়ের করেন।
সরকারি চাকুরিজীবী সিনিয়র স্টাফ নার্স মাধুরী হাকিম তার অভিযোগে জানান, ধর্মান্তরের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হন তিনি। মুসলিম ধর্মের প্রতি অনুরাগ প্রকাশ করে নানা প্রলোভনের আশ্রয় নিয়ে এহসানুল হাকিম তাকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণে বাধ্য করেন। এরপর ২০২৩ সালের ১৭ মে ঢাকার নোটারি পাবলিক অফিসের মাধ্যমে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক ৯ লাখ ৭৮ হাজার ১ টাকা দেনমোহরে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের পর মাধুরী হাকিম স্বামীকে নগদ ৩ লাখ টাকাও দেন।
তবে সংসার শুরুর পরই পর্দা ওঠে আসল রূপে। এহসানুল হাকিম নেশাগ্রস্ত হয়ে ওঠেন, পর নারীতে আসক্ত হন এবং ঘরের অর্থ, আসবাবপত্র ও স্বর্ণালঙ্কার একে একে নষ্ট করতে থাকেন। শুধু তাই নয়, মাধুরীর গর্ভে থাকা দুটি সন্তানও তার অবহেলা ও নির্যাতনে হারিয়ে যায়। বর্তমানে মাধুরী হাকিম বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্সিং কোয়ার্টারে তার একমাত্র কন্যাসন্তানকে নিয়ে থাকেন।
মামলার অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ১৯ জুলাই বিকাল ৪টার দিকে এহসানুল হাকিম নার্সিং কোয়ার্টারে এসে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। মাধুরী এতে রাজি না হলে পিঠের ডান পাশে এবং ডান হাতে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেন তিনি। গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি চিকিৎসা নেন। এরপর হুমকি দিয়ে এহসানুল হাকিম বলেন, তিনি অন্যত্র যৌতুক নিয়ে নতুন বিয়ে করবেন, এবং বাসা থেকে চলে যান।
মাধুরীর আইনজীবী শেখ সাইফুর হক জানিয়েছেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দিয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।