আলোচিত ইসলামি বক্তা ডা. জাকির নায়েক পরিচালিত ‘পিস টিভি বাংলা’ ফের চালুর দাবি জানিয়ে সরকারকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রোববার (১৩ জুলাই) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আশরাফুজ্জামান এ নোটিশ পাঠান। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর পাঠানো এই নোটিশে বলা হয়, ৭ দিনের মধ্যে পিস টিভি বাংলার ওয়েবসাইট এবং ইউআরএলের ব্লক প্রত্যাহার করতে বিটিআরসিকে নির্দেশ দিতে হবে। অন্যথায় উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
২০০৬ সালে ডা. জাকির নায়েক ‘পিস টিভি’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরে ইংরেজি, বাংলা, উর্দু ও চাইনিজ ভাষায় এই চ্যানেলের সম্প্রচার শুরু হয়। ২০১১ সালের ২২ এপ্রিল ‘পিস টিভি বাংলা’ প্রচার শুরু হওয়ার পর অল্প সময়েই বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। কিন্তু ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ঢাকার গুলশানে ভয়াবহ হোলি আর্টিজান হামলার পর অভিযোগ জানানো হয়, হামলাকারীদের একজন জাকির নায়েকের বক্তব্য দ্বারা উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। সেই ঘটনার পর সেই অজুহাতে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকার দেশের ক্যাবল নেটওয়ার্কে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশের মাধ্যমে পিস টিভির ডাউনলিংক অনুমতিও বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ভারতেও একই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সেই থেকে ভারতীয় এই ইসলাম প্রচারক মালয়েশিয়ায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন। সেখানে তার স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি রয়েছে।
এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের পরে গত বছরের ১৯ আগস্ট নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রচারিত এক প্রশ্নোত্তর পর্বে ডা. জাকির নায়েক জানান, পিস টিভি বাংলাসহ ইংরেজি, উর্দু এবং চাইনিজ ভাষায় এখনও স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার চালু আছে। তবে বাংলাদেশ ও ভারতে ক্যাবল অপারেটরদের ডাউনলিংকের অনুমতি তুলে নেওয়ায় সেখানকার দর্শকরা সেটি দেখতে পাচ্ছেন না।
তিনি আরও জানান, স্যাটেলাইট সম্প্রচার বন্ধ হয়নি। শুধু ক্যাবল লাইনে সম্প্রচার বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে নতুন করে অনুমতির জন্য আবেদন করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অনুমতি মিললেই কয়েক দিনের মধ্যেই পিস টিভি বাংলা ক্যাবল নেটওয়ার্কে চালু হয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
এরই মধ্যে আইনজীবী আশরাফ-উজ-জামান এই দাবিকে আরও জোরালো করে সরকারের কাছে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন। পিস টিভি বন্ধের ঘটনা, সম্প্রচারের বর্তমান অবস্থা এবং ফের চালুর দাবির প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা।
বর্তমানে পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটির দিকে তাকিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম দর্শকসহ অনেকেই।