
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ট্রমা ম্যানেজমেন্ট। গত ১২ ই মার্চ, ২০২৫ বুধবার একজন রোগী নারায়ণগঞ্জ থেকে “টেটা ইনজুরি” নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিটে আসেন।
টেটা সাধারণত দূর থেকে অথবা পানির উপর থেকে মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত একটি ধারালো অস্ত্র। ২৬ বছর বয়সী পুরুষ রোগীটির ডান চোখের নিচ দিয়ে টেটাটি প্রবেশ করে মুখমণ্ডলের হাড় এবং বায়ু কুঠুরি ভেদ করে মস্তিষ্কের মাস্টারগ্লান্ড পিটুইটারির ঠিক নিচে অবস্থান করছিল। সিটি স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালনের প্রধান রক্তনালী ইন্টারনাল ক্যারোটিড আর্টারি থেকে কয়েক মিলিমিটার দূরে এর অবস্থান চিকিৎসকগণ সনাক্ত করেন। প্রসঙ্গত, এই রক্তনালীর ইনজুরিতে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেকটা শূন্যের কোঠায় পৌঁছায়।
এমন জটিল একটা পরিস্থিতিতে রোগীর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগ, এনেসথেসিয়া বিভাগ এবং চক্ষু বিভাগ রোগীটির অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেয়।
নিউরোসার্জারির সহযোগী অধ্যাপক ও নিউরোসার্জারি ভায়োলেট ইউনিট প্রধান ডা. কানিজ ফাতেমা ইশরাত জাহান (রিফাত)-এর নেতৃত্বে অত্যন্ত জটিল এবং বিপদজনক অপারেশন টি সম্পন্ন করা হয়। ঘন্টাখানেক ধরে চলা অপারেশন টি তে সহায়ক হিসেবে ছিলেন ডা. কাজী ইরফান সোবহান, ডা. গাজী হাবিবুল্লাহ, ডা. শুভ্র সাহা, ডা. হাসান, ডা. পুনম রায় এবং এনেসথেসিয়োলজিস্ট ডা. আল বিরুনী।
কোন রকমের মস্তিষ্কের ইনজুরি, রক্তনালীর ইনজুরি, চোখের ইনজুরি ব্যাতীত অত্যন্ত সফলতার সাথে অপারেশন টি সম্পন্ন হয়। ইমারজেন্সি অপারেশন থিয়েটারের এবং পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের সেবিকা বৃন্দ, ওটি স্টাফদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা এবং আন্তরিকতায় রোগীটিকে অপারেশন পরবর্তী যথাসময়ে ওয়ার্ডে প্রেরণ করা সম্ভব হয়। কোন রকম মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুর অক্ষমতা ব্যতীত রোগীকে হাসপাতাল থেকে ছুটি প্রদান করা হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সকল সরকারী হাসপাতালে এই ধরণের অত্যন্ত জটিল অপারেশন সম্পুর্ণ বিনামূল্যে করা হয়ে থাকে।
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd