অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেল পোষা কমলা বিড়ালের রহস্যময় জিন - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
রাজধানী দখলের গোপন পরিকল্পনায় গেরিলা প্রশিক্ষণ, আওয়ামী নেতাকর্মী গ্রেফতার গাজায় ত্রাণ নেওয়ার সময় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ গেল ৭১ জনের জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশে এলজিবিটিকিউ নিয়ে কাজ করবে: মিলল গোপন প্রমাণ ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ – ভূরাজনৈতিক শঙ্কা ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার যুগপৎ জাগরণ রোহিঙ্গাদের ওপর আরাকান আর্মির নির্মম নির্যাতনের তথ্য, ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ শেষ হলো বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়া ‘এক্সারসাইজ টাইগার লাইটনিং-২০২৫’ পর্তুগালে ভয়াবহ দাবানল: সাতজনের মৃত্যু, বহু এলাকা পুড়েছে সাপে কেটেছিল এক সাপুড়েকে, সেই সাপই কাঁচা চিবিয়ে খেলেন আরেক সাপুড়ে পাকিস্তানের সঙ্গে তেল উন্নয়ন চুক্তির ঘোষণা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের

অবশেষে খুঁজে পাওয়া গেল পোষা কমলা বিড়ালের রহস্যময় জিন

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক
  • আপডেট সময় শনিবার, ২৪ মে, ২০২৫
  • ১৬৩ বার দেখা হয়েছে

অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মতো বাঘ, ওরাংওটাং, বা লালচুলে মানুষের শরীরে কমলা লোম দেখা গেলেও, পোষা বিড়ালের ক্ষেত্রে এই রঙটি একেবারেই ব্যতিক্রম। কারণ, বিড়ালের মধ্যে এই কমলা রঙের লোম সাধারণত পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়, এবং এটি সরাসরি তাদের লিঙ্গের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

বহুদিন ধরে বিজ্ঞানীরা ধারণা করে আসছিলেন যে বিড়ালের X ক্রোমোজোমে একটি অজানা ‘কমলা জিন’ আছে, যা তাদের এই বিশেষ রঙের জন্য দায়ী। তবে শত বছরের গবেষণার পরও এই জিনকে সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে জাপানের কিউশু বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক হিরোইয়ুকি সাসাকির নেতৃত্বে একটি দল এই জিনটির খোঁজ পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণা সাময়িকী কারেন্ট বায়োলজি-তে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষকরা জানাচ্ছেন, পুরুষ বিড়ালের X ক্রোমোজোমে যদি ‘sex-linked orange’ নামের একটি নির্দিষ্ট জিনগত পরিবর্তন ঘটে, তাহলে সেই বিড়াল পুরোপুরি কমলা হয়ে যায়। অন্যদিকে, স্ত্রী বিড়ালের ক্ষেত্রে দুটি X ক্রোমোজোমেই এই পরিবর্তন থাকতে হয়, যা অনেক কম দেখা যায়।

যদি কোনো স্ত্রী বিড়ালের একটিতে কমলা এবং অন্যটিতে কালো জিন থাকে, তাহলে তার শরীরে ছোপ ছোপ রঙ হয়—যাকে ক্যালিকো বা টার্টলশেল বলা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিটি কোষে একটি করে X ক্রোমোজোম এলোমেলোভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে, যার ফলে দেহের বিভিন্ন অংশে ভিন্ন ভিন্ন রঙের লোম তৈরি হয়।

গবেষণায় ১৮টি বিড়ালের ডিএনএ বিশ্লেষণ করা হয়—যার মধ্যে ১০টি ছিল কমলা এবং ৮টি ছিল অন্যান্য রঙের। দেখা যায়, সব কমলা বিড়ালেরই ARHGAP36 নামক একটি জিনে নির্দিষ্ট অংশ মুছে গেছে, যা অন্য বিড়ালদের মধ্যে পাওয়া যায়নি।

এখন পর্যন্ত এই জিনকে শরীরের বিকাশে ভূমিকা রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধরা হলেও, রঙের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক আছে বলে আগে কেউ ভাবেনি। গবেষকরা দেখেছেন, কমলা রঙের বিড়ালদের পিগমেন্ট কোষে এই জিনটি অস্বাভাবিকভাবে সক্রিয় হয়, যার ফলে লোমের স্বাভাবিক রঙ নির্ধারণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।

এই অস্বাভাবিক জিন-প্রকাশ কেবল রঙ নয়, বিড়ালের আচরণেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন। যদিও এখনো কমলা বিড়ালের ব্যক্তিত্ব নিয়ে বৈজ্ঞানিকভাবে বিস্তৃত গবেষণা হয়নি, তবুও অনেক মালিক বিশ্বাস করেন, তাদের স্বভাব অন্য রঙের বিড়ালের চেয়ে ভিন্ন।

বিজ্ঞানীদের ধারণা, যেহেতু অধিকাংশ কমলা বিড়াল পুরুষ, তাই তাদের মধ্যে যে দুষ্টুমিপূর্ণ ও বন্ধুসুলভ স্বভাব দেখা যায়, তার পেছনেও জিনগত প্রভাব থাকতে পারে।

এই আবিষ্কার শুধু পোষা বিড়ালের রঙ ও স্বভাব বুঝতেই সাহায্য করবে না, ভবিষ্যতে প্রাণীর আচরণ ও জিনের সম্পর্ক নিয়েও নতুন পথ খুলে দেবে বলে আশা করছেন গবেষকরা।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT