বর্তমানে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো ভয়াবহ নৃশংসতার আট বছর পূর্তির উপলক্ষে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) তাদের প্রতি সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, রোহিঙ্গারা এখনো নিপীড়ন, রাষ্ট্রহীনতা ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন, আর এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং টেকসই সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত উদ্যোগ অপরিহার্য।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এক মিলিয়নেরও বেশি রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। মিয়ানমারেও হাজার হাজার মানুষ এখনো হত্যাকাণ্ড, বৈষম্য ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের মুখে রয়েছেন। ওআইসি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) চলমান মামলার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সংস্থাটি স্পষ্টভাবে জানায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মি যেন আইসিজের দেওয়া অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা মেনে চলে এবং রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ও অন্যান্য ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের মানবিকতা ও উদারতার প্রশংসা জানিয়ে বলা হয়, বিপুলসংখ্যক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দিয়ে তারা এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ওআইসি আরও স্বীকৃতি দেয়, বহু মুসলিম দেশ এই সংকটকালে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে।
সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানায়, মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, মর্যাদাপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করে সমন্বিত, ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধানের পথে এগিয়ে যাওয়া এখন সময়ের দাবি।
আজকের এই স্মরণীয় দিনে ওআইসি রোহিঙ্গা মুসলমানদের অদম্য সাহস ও দৃঢ়তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানায় এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে।