খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি ৫ ব্যাংকে, ১৬টির মূলধন ঘাটতি - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
নির্বাচন বানচালের চেষ্টা হবে — প্রধান উপদেষ্টার সতর্কবার্তা শেখ হাসিনাকে ‘একবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বড় খুনি’ বললেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব নির্বাচন থেকে আওয়ামী লীগকে বাদ দিলে ‘লাখো মানুষ ভোট বর্জন করবে’ — দিল্লি থেকে শেখ হাসিনা শেরপুরে জেলা প্রশাসকের গণশুনানি অনুষ্ঠিত গুচ্ছে ফিরতে কুবি প্রশাসনকে ইউজিসির চিঠি কুবিতে হাল্ট প্রাইজ অন ক্যাম্পাস রাউন্ডের রেজিস্ট্রেশন শুরু জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের তথ্য চেয়েছে কুবি প্রশাসন  আত্রাইয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদযাপন আইসিইউতে জিকির করতে করতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হাফেজ ত্বকী কুবিতে মঞ্চস্থ হলো ‘মুখ ও মুখোশ’ নাটক: সাইবার অপরাধে সচেতনতার বার্তা

খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি ৫ ব্যাংকে, ১৬টির মূলধন ঘাটতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫
  • ৮৮ বার দেখা হয়েছে
খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি ৫ ব্যাংকে, ১৬টির মূলধন ঘাটতি

দেশের ব্যাংক খাত বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। মাত্র পাঁচটি ব্যাংকের কাছেই রয়েছে মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি। ফলে এই ব্যাংকগুলোর মূলধন সংকট, আয় হ্রাস, এবং আর্থিক ঘাটতি বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, খেলাপি ঋণ বৃদ্ধির ফলে পুরো ব্যাংক খাত ঝুঁকির মুখে পড়েছে।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের ব্যাংক খাতের মোট মূলধনের অনুপাত (এআরএআর) ৬.৮৬ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অথচ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, এই হার ১০ শতাংশের বেশি থাকা বাধ্যতামূলক। গত বছরের জুনে এ অনুপাত ছিল ১০.৬৪ শতাংশ।

খেলাপি ঋণের বর্তমান চিত্র

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে ব্যাংক খাতে শ্রেণিকৃত ঋণ বা খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২.৮৫ লাখ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ১৭ শতাংশ। ডিসেম্বরে তা বেড়ে ২০ শতাংশে পৌঁছেছে। এর মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১.৪৫ লাখ কোটি টাকা, যা মোট খেলাপি ঋণের ৫১ শতাংশ।

খেলাপি ঋণের সবচেয়ে উদ্বেগজনক দিক হলো, এর ৮২ শতাংশই অনাদায়ী কু-ঋণ, যা আদায় করা প্রায় অসম্ভব। এই পরিস্থিতি সামগ্রিকভাবে ব্যাংক খাতকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

কেন বাড়ছে সংকট?

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ায় ব্যাংকগুলোকে বেশি প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে। ফলে তাদের মূলধন কমে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১০ সালের পর থেকে এমন খারাপ পরিস্থিতি আর দেখা যায়নি।

বিশ্লেষকরা মনে করেন, আগের সরকারের সময় ব্যাংক খাতে অনিয়ম ও লুটপাটের কারণে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পর সমস্যাগুলো উন্মোচিত হওয়ায় খেলাপি ঋণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ব্যাংক খাতের প্রভাব ও ঝুঁকি

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, খেলাপি ঋণের এই পরিস্থিতি অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে।

  • আর্থিক খাত দুর্বল হবে: মূলধন সংকটে ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেবে।
  • ঋণ প্রদান কমে যাবে: বিনিয়োগ তহবিল সংকুচিত হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ঋণ পাওয়া কঠিন হবে।
  • আন্তর্জাতিক লেনদেনে ঝুঁকি: বিদেশি বাণিজ্যে খরচ বাড়বে এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “এআরএআর কমে গেলে ব্যাংকগুলোর ঋণ দেওয়ার ক্ষমতা কমে যায়, যা অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।”

উপায় কী?

ব্যাংক বিশেষজ্ঞরা সংকট সমাধানের জন্য কিছু পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছেন:

  • সুশাসন নিশ্চিত করা: ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় জবাবদিহিতা বাড়ানো।
  • খেলাপি ঋণ আদায়: কঠোর নজরদারি এবং পুনঃমূলধনীকরণ কার্যক্রম চালু করা।
  • মুনাফা বৃদ্ধি: ব্যাংকগুলোর আয়ের পথ খুঁজে বের করা।

বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের চূড়ান্ত তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে দেশের ব্যাংক খাত গভীর সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা।

  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
  • দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT