উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে কুয়াকাটার সদ্য নির্মিত ‘মেরিন ড্রাইভ’ সড়ক। মাত্র দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কটি, যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় ৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, বুধবার সকাল ১০টার দিকে জোয়ারের তোড়ে বিভিন্ন অংশে ভেঙে পড়ে।
সড়কটির জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত একাধিক স্থানে ধস দেখা দেয়, ফলে আশেপাশের এলাকায় পানিতে ডুবে যায় পুলিশ বক্স, সরদার মার্কেট ও জনপ্রিয় ফুচকা মার্কেটের মতো স্থানগুলো। পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে মাইকিং করে অভিযান চালায় ট্যুরিস্ট পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ও পর্যাপ্ত তদারকির অভাবেই এই বিপর্যয় ঘটেছে। একজন বাসিন্দা জানান, “ঠিকভাবে নির্মাণকাজ তদারকি না হওয়ায় এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পুরো প্রকল্পটাই হয়তো ভেসে যাবে।” স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বাশার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, “বর্ষাকাল সামনে, সমুদ্র আরও উত্তাল হবে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়বে।”
উল্লেখ্য, পর্যটন বিকাশ ও উপকূল সংরক্ষণের লক্ষ্যে কুয়াকাটা পৌরসভার উদ্যোগে ২০২৪ সালে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। তবে শুরু থেকেই কাজের গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।
পটুয়াখালীর উপকূলীয় চারটি উপজেলার ১১টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২০ হাজারের বেশি মানুষ। পাশাপাশি ১০০টিরও বেশি মাছের ঘের ডুবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে চাষিরা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ২ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সতর্কতা আগেই দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে পটুয়াখালীসহ চারটি উপকূলীয় জেলায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, “খারাপ আবহাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে আমরা লোকজনকে সরিয়ে নিচ্ছি।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের পর থেকে সড়কটির বাকি বিল পরিশোধ করা হয়নি। তিনি জানান, ক্ষতিপূরণ আদায় ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসিন সাদীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।