রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে দায়িত্ব পালনে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের দাবি, তিনি দেশীয় মৎস্য সম্পদ রক্ষা, অবৈধ জাল বিনষ্ট, নিয়মিত বাজার তদারকি, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি, মা ইলিশ রক্ষা অভিযান ও জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনে নিয়মিত দায়িত্বপালনে ব্যর্থ হয়েছেন।
এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গত ১ জুলাই এক স্থানীয় সাংবাদিক তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করেন। আবেদনে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান, জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি এবং জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ পালনের বাজেট ও ব্যয়ের বিস্তারিত হিসাব চাওয়া হয়।
কিন্তু দীর্ঘ সময় গড়িমসি করে আবু বকর সিদ্দিক গত ৭ আগস্ট তথ্য প্রদান করেন। সেখানে তিনি কেবল বাজেটের মোট বরাদ্দ ও খরচের অঙ্ক উল্লেখ করেন, কিন্তু কোন খাতে কত খরচ হয়েছে—সেই বিস্তারিত তথ্য দেননি।
প্রদত্ত তথ্যে দেখা যায়—
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ: ২০২৩ সালে ৬০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ৬৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান এবং সমপরিমাণ খরচ দেখান।
জাটকা সংরক্ষণ কর্মসূচি: ২০২৩ ও ২০২৪ উভয় বছরেই ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ পান এবং খরচ দেখান।
মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান: ২০২৩ সালে ৫০ হাজার টাকা, ২০২৪ সালে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান এবং খরচ দেখান।
তবে প্রাপ্ত বাজেট কোন খাতে কত ব্যয় হয়েছে, সেই বিস্তারিত তথ্য তিনি দেননি।
স্থানীয়রা জানান, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একজন কর্মকর্তা তিন বছরের বেশি একই কর্মস্থলে থাকতে পারেন না। কিন্তু আবু বকর সিদ্দিক ২০২০ সালের ২৯ ডিসেম্বর থেকে কালুখালীতে যোগদানের পর এখনো পর্যন্ত একই কর্মস্থলে আছেন। তারা অভিযোগ করেন, তিনি “উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ” করে টানা পাঁচ বছর ধরে একই পদে রয়েছেন। এ বিষয়ে তারা তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, “আমি যা বরাদ্দ পেয়েছি তার সব খরচ করেছি। কোন খাতে কত খরচ করেছি তা আপনি দেখতে পারবেন না। আমাদের অডিট হয়, তখন তারা দেখবে। আপনি দেখার কেউ না।”
কালুখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহুয়া আফরোজ বলেন, “তথ্য জানার অধিকার দেশের সকল নাগরিকের রয়েছে। মৎস্য কর্মকর্তা এ ধরনের তথ্য দিতে বাধ্য। তিনি কেন বিস্তারিত দেননি তা আমার বোধগম্য নয়। অবশ্যই আপনার চাহিত তথ্য তিনি দিতে হবে।”