জুলাইয়ের জ্বলে ওঠা সেই ক্ষণটি - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন আন্দ্রে রাসেল ইসির ওয়েবসাইটে আবারও ফিরল আওয়ামী লীগের ‘নৌকার’ প্রতীক ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে পুড়ে ছাই হচ্ছে ২৭ হাজার শিশুর খাবার রাশিয়ার ড্রোন হামলায় কেঁপে উঠল ইউক্রেন, পাল্টা হামলা চালালো কিয়েভ যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় ৭.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামি সতর্কতা জারি গ্রেনেড হামলা: তারেক রহমানসহ আসামিদের খালাসের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু বৃষ্টিতে ভেজা এবং হাঁচি-কাশি-জ্বর মাদ্রিদে মুসলিমদের জন্য ১৫,০০০ বর্গমিটার কবরস্থান অনুমোদন সত্য গোপনে এক ধাপ এগিয়ে ‘প্রথম আলো’ ও ‘ঢাকা ট্রিবিউন’ ৪৮তম বিশেষ বিসিএস (স্বাস্থ্য )পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা

জুলাইয়ের জ্বলে ওঠা সেই ক্ষণটি

ডা. শামসুল আরেফিন শক্তি
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ৪ জুলাই, ২০২৫
  • ৬৮ বার দেখা হয়েছে

জুলাই ২০২৪।
পিজিতে তখন আমাদের পরীক্ষা সামনে। বড় পরীক্ষা। বোর্ড এক্সাম টাইপ। দৈনিক আসি-যাই। আর দেখি ছেলেরা কোটার বিরুদ্ধে শাহবাগে জমা হয়েছে, শ্লোগান প্রভৃতি দিচ্ছে। দাঁড়িয়ে দেখি। সহমত হই। মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলে-মেয়ে পর্যন্ত ঠিক আছে মানলাম, নাতি-নাতনির কি অবদান? কী ত্যাগ যে তাদেরও কোটা দিতে হবে?

তবে মনে ছিল: কত আন্দোলন এল গেল। হাসিনা সবই সিস্টেমে ফেলে দেয়। এটাও দিবে। কেউ শেখ মুজিবের ছবি নিয়ে আন্দোলন করে, কেউ গণভনে গিয়ে সালাম করে আসে। দিনশেষে আওয়ামী বৃক্ষের সর্বগ্রাসী ছায়াতেই সকলের গন্তব্য। কী আর হবে: আবার কোর্টের আদেশ স্থগিত করবে। আন্দোলনকারীরা বলবে: থ্যাংক ইউ পিএম। কতো দেখলাম। যত আন্দোলনই করো, মুজিবের ছবি নিয়ে বসেছো, জয় বাংলা মারাচ্ছো মানে দিনশেষে তুমি হাসিনার পায়েই পড়ছো।

সেদিন রাত ১০-১১টা। বা আরও বেশি।
পড়ার ফাঁকে ক্লান্তি কাটাতে ফেসবুকে ঢুকলাম। ঢুকেই শোয়া থেকে তড়াক করে উঠে বসলাম। উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে গেলাম। পুরো ফীড জুড়ে শুধু…
তুমি কে আমি কে
রাজাকার রাজাকার

আরে এরা করছে কি কামডা? এরা তো ডিরেক্ট পোষ মানতে অস্বীকার করলো। আওয়ামী বৃক্ষের গোড়ায় কুঠার মারলো। ১৬ বছরের আওয়ামী হেজিমনির শেকড় ধরে টান দিলো। রাক্ষসের যে প্রাণভোমরা, ডালিমকুমাররা এক শ্বাসে ডুব দিয়ে তুলে আনলো তাকে। টনক নড়লো রাক্ষসের।

আমি বুঝে গেলাম এটা ভিন্ন কিছু।
হয় তিয়েনআনমেনের মতো গণহত্যা।
নইলে হাসিনার পতন।

আমার কাছে জুলাই মানে ‘সবকিছু ভেঙে দেয়া’ এই দুই লাইনই।
তুমি কে আমি কে
রাজাকার রাজাকার

৫০ বছর স্বাধীনতা বেচে খাওয়া, মুক্তিযুদ্ধের ডারতীয় ন্যারেটিভ, ডারতের সফট পাওয়ার, ঢিন্দুত্ববাদ, ইসলামবিদ্বেষ, জাতিকে বিভাজন করে রুল, না-মানুষ বানিয়ে ফেলার বৈধতা… সব ভেঙেচুরে ফেলা দুই লাইন। চোখে চোখ রেখে ১৬ বছরের সব কিছুকে চ্যালেঞ্জ করা দুই লাইন: যাহ, আমি রাজাকার। পারলে কিছু কর।

স্বতঃস্ফূর্ত শ্লোগান ছিল এটাই। ক্ষোভ, কষ্ট, ক্রোধ, অস্বীকৃতির শ্লোগান। একেবারে র’, অসংস্কৃত, আদি, হৃদয় থেকে উদ্গত। পলিটিক্যালি কারেক্ট হবার তাড়না বিহীন।

পরে পলিটিক্যালি কারেক্ট হবার আশায় যুক্ত হয়েছে : কে বলেছে কে বলেছে/ স্বৈরাচার স্বৈরাচার। আরও অনেক কিছু। ঐ মহাতাৎপর্যময় দুই লাইন যে অস্বীকার করবে, বেঁকিয়ে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে বদলে দেবার চেষ্টা করবে, জুলাই থেকে বাদ দিতে চাইবে, লিখে রাখেন: সে আওয়ামী লীগ হয়ে উঠবে। কারণ, এই দুই লাইনই পুরো জুলাইকে সত্যিকারভাবে ধারণ করে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT