জুলাই শহিদদের স্মরণে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখা।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এয়াকুব আলী, প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী, শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদসহ দলের নেতাকর্মীরা।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, “১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ তার আত্মত্যাগের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করেছিল। তার রক্ত আমরা বৃথা যেতে দেব না। জুলাইয়ের এক বছর পূর্তিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ইবি শাখা মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করছে।”
তিনি বলেন, “এই দিনে আবু সাঈদ বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল হাসিনাকে বিদায় করার জন্য। শান্ত, ফারুক, ওয়াসিমসহ ওই দিনে আমাদের পাঁচ ভাই শহীদ হয়েছিল। এজন্য আমরা এই দিনটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। শহীদ আবু সাঈদসহ ১৫০০ শহিদের বিনিময়ে আমরা এই পরিবর্তিত দেশ পেয়েছি, যেখানে ফ্যাসিস্টদের কোনো জায়গা নেই।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনের সময় আমাদের আত্মার সম্পর্ক ছিল, সেটি যেন আমরা বজায় রাখি। এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকা মানে শত্রুতা নয়। আমাদের শত্রু একমাত্র আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা ও দিল্লি।”
প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুল গফুর গাজী বলেন, “২৪ সালে আজকের দিনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ প্রথম শহীদ হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য আজকের দিনটি গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনা বিনা ভোটে সরকার গঠন করেছিল, ২০১৮ সালের নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে নিয়ে এবং ২০২৪ সালে যেনতেনভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছিল। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে এই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায় হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অগ্রযাত্রা যেন ব্যহত না হয়, এজন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। জনাব তারেক রহমান দেশে সংস্কারের জন্য একত্রিশ দফা ঘোষণা করেছিলেন, তা বাস্তবায়নের জন্য জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতাকর্মীদের সচেষ্ট থাকতে হবে। বিপ্লবে যারা এখনও অসুস্থ হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছি।”
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. এয়াকুব আলী বলেন, “৩৬ জুলাই কোনো বিপ্লব নয়, এটি একটি গণঅভ্যুত্থান ছিল। এই গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। আমি হলফ করে বলতে পারি, ৩৬ জুলাইয়ের এই অবিনাশী দিন কখনো বাংলাদেশীদের অন্তর থেকে মুছে যাবে না। যারা ষড়যন্ত্রকারী সেই ফ্যাসিস্টরা গত ১৫ বছর ধরে আমাদের ঘাড়ের ওপর চেপেছিল, তাদের ষড়যন্ত্র এখনো শেষ হয়নি। তাদের নেতা-নেত্রীরা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাদের কৃতদাসরা রয়ে গেছে। আজ গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতৃবৃন্দের ওপর নেক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “তোমরা যতই ষড়যন্ত্র করো, বাংলার দামাল ছেলেরা কখনো থামবে না। ফ্যাসিস্টরা বাংলার যে প্রান্তেই থাকুক আমরা খুঁজে তাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবো। যারা ২৪ জুলাইয়ের চেতনাকে ধ্বংস করতে চাইবে, তারা যেই দলের লোকই হোক, আমরা তাদের প্রতিহত করবো।”