ইসরায়েলে মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে যান চলাচল অচল হয়ে পড়েছে। তেল আভিভ ও আশেপাশের বিভিন্ন মহাসড়কসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান সড়কগুলোতে বিক্ষোভকারীরা অবস্থান নিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। বিভিন্ন জায়গায় টায়ারে আগুন ধরিয়ে ধোঁয়ার মেঘ তৈরি করা হয়, যা চলাচল আরও কঠিন করে তোলে। পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছু এলাকায় অবরোধ সরানো হলেও বহু জায়গায় দীর্ঘ সময় যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘Hostages and Missing Families Forum’–এর উদ্যোগে ঘোষিত “সর্বহার ফাঁটা দিন” কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিক্ষোভ শুরু হয় সকাল ৬টা ২৯ মিনিটে, হামাসের গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার সময়টিকে স্মরণ করে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করছেন, গাজায় আটক থাকা বন্দিদের দ্রুত মুক্ত করতে হবে এবং এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতনিয়াহুর সরকারকে অবিলম্বে সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। বিভিন্ন প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল—“Dead hostages don’t speak”, “Saving the hostages!”, “The government is killing the hostages”।
প্রধান অবরোধগুলোর মধ্যে ছিল তেল আভিভের অয়ালন হাইওয়ে, হাইওয়ে ১, হাইওয়ে ২, রুট ৪৪৩, হাইওয়ে ৪, ৪০, ৪৪, ৫৩১ ও উত্তর ইসরায়েলের হাইওয়ে ৬৫, ৭৫ এবং ৮৫। সেন্ট্রাল অঞ্চলের মাশুবিম, হাওগেন, রাআনানা, বনে দারোম ও নাহশোন জংশন, উত্তরের মেগিদ্দো, মেনাশে, নাহালাল, আমিয়াদ জংশন এবং দক্ষিণের রাম মাস্মিয়্যা এলাকায় প্রধান সড়কগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এসব অঞ্চলে শত শত গাড়ি আটকে পড়ে এবং যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। জরুরি সেবা যানবাহন চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তার উপর বসে পড়েন, আগুন জ্বালিয়ে শ্লোগান দেন এবং পুলিশের নির্দেশ উপেক্ষা করে অবরোধ চালিয়ে যান। অনেক এলাকায় পুলিশ জোর করে বিক্ষোভকারীদের সরানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সড়কের অবরোধের কারণে রাজধানী তেল আভিভসহ অন্যান্য প্রধান শহরে স্বাভাবিক কর্মদিবস প্রায় অচল হয়ে পড়ে।
এই কর্মসূচির কেন্দ্রীয় দাবি হলো গাজায় থাকা বন্দিদের মুক্তির জন্য সরকারকে দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরে বাধ্য করা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, “সবাই ফিরে না আসা পর্যন্ত আমরা থামব না।” তাদের অভিযোগ, নেতনিয়াহুর সরকার বিলম্ব করে বন্দিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে।
এ পরিস্থিতিতে সরকারের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা বৈঠকে বসেছে। বৈঠকে গাজায় সামরিক অভিযান, সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি ও বন্দিমুক্তি আলোচনার বিষয়গুলো প্রধান এজেন্ডা হিসেবে উঠবে বলে জানা গেছে।
ইসরায়েলের পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন অনেক সাধারণ মানুষও
অবরোধ ও বিক্ষোভে সারা দেশে জনজীবন অচল হয়ে পড়লেও আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, তারা তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন যতক্ষণ না সরকার বন্দিদের ফিরিয়ে আনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়।
তেল আভিভে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ও যানবাহন আটকে বিক্ষোভ
শত শত গাড়ি আটকে পড়েছে বিভিন্ন মহাসড়কে