ইরানের সর্বোচ্চ নেতার উপদেষ্টা আলী লারিজানি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যৌথভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেবল আলোচনাভিত্তিক সম্মেলন নয়, কার্যকর উদ্যোগ নেয়াই একমাত্র পথ, নতুবা ইসরায়েলকে নতুন করে আগ্রাসনের লাইসেন্স দেওয়া হবে।
লারিজানির এই মন্তব্য এমন সময়ে এসেছে যখন দোহায় ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পর কাতার সোমবার এক জরুরি মুসলিম শীর্ষ সম্মেলনের ঘোষণা দিয়েছে। কাতার জানিয়েছে, সম্মেলনে দোহায় ইসরায়েলি আক্রমণের বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। আঞ্চলিক দেশগুলোর অংশগ্রহণে এই বৈঠককে কেন্দ্র করে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
এক্স-এ দেওয়া পোস্টে লারিজানি বলেন, একটি যৌথ অপারেশন রুম গঠনই যথেষ্ট হবে ইসরায়েলের পৃষ্ঠপোষকদের উদ্বিগ্ন করার জন্য এবং তাদের নীতিতে পরিবর্তন আনতে চাপ দেওয়ার ক্ষেত্রে। তিনি সতর্ক করে বলেন, শীর্ষ সম্মেলনে যদি দৃঢ় পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তবে সেটি কার্যত ইসরায়েলের জন্য আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
এর আগে গত জুনে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে কয়েক দিনের তীব্র সংঘর্ষ হয়েছিল। তখন ইসরায়েল ইরানের ভেতরে হামলা চালায় এবং পাল্টা আঘাত আসে তেহরান থেকেও। এই প্রেক্ষাপট থেকেই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্য আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দোহায় নতুন করে হামলা এবং আসন্ন সম্মেলন পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কাতারে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের এই সম্মেলনের লক্ষ্য ইসরায়েলকে একটি সুস্পষ্ট বার্তা দেওয়া। কিংস কলেজ লন্ডনের গবেষক আন্দ্রেয়াস ক্রিগ মন্তব্য করেন, উপসাগরীয় দেশগুলো ইসরায়েলের হামলাকে সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন ও কূটনীতির ওপর আক্রমণ হিসেবে দেখছে। তাঁর মতে, এই বৈঠকের উদ্দেশ্য হলো ইসরায়েলের সামনে ‘রেড লাইন’ টেনে দেওয়া এবং স্পষ্ট করে জানানো যে আগ্রাসনকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেওয়া হবে না।
আঞ্চলিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সম্মেলন যদি কেবল আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে ইরান ও তার মিত্রদের চাপ আরও বাড়বে। তবে কার্যকর সিদ্ধান্ত এলে তা আঞ্চলিক শক্তির ভারসাম্য বদলে দিতে পারে এবং ফিলিস্তিন ইস্যুতে নতুন অবস্থান তৈরি করতে পারে।