উইম্বলডনের সবুজ কোর্টে এবারের নারী এককের ফাইনালটা হয়ে উঠেছিল একতরফা। দু’জনেরই সামনে ছিল জীবনের প্রথম উইম্বলডন শিরোপা জয়ের হাতছানি। তবে লড়াই জমাতে পারলেন না আমেরিকান তারকা, ১৩তম বাছাই অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভা। কোর্টে ঝড় তুললেন পোল্যান্ডের অষ্টম বাছাই ইগা সিওনতেক। মাত্র ৫৭ মিনিটের লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে শূন্যের ঘরে আটকে রেখে দুর্ধর্ষ এক জয়ে উইম্বলডন ট্রফি উঠলো সিওনতেকের হাতে।
অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ঐতিহাসিক কোর্টে এই জয়টা শুধু সিওনতেকের ক্যারিয়ারের প্রথম উইম্বলডন নয়, বরং এই আসরের ইতিহাসে বিরল এক অধ্যায়ও। ৬-০, ৬-০ গেমে জয় কেবল উইম্বলডনের ইতিহাসেই তিনবার দেখা গেছে। ১৯১১ সালে ডরোথি ল্যাম্বার্ট-চ্যাম্বার্স এবং ১৯৮৮ সালে স্টেফি গ্রাফের পর এবার সেই কীর্তিতে নাম লেখালেন ২৪ বছর বয়সী পোলিশ তারকা ইগা সিওনতেক।
শুরু থেকেই যেন বিদ্যুত গতির আগ্রাসী টেনিস খেলছিলেন সিওনতেক। অ্যামান্ডা অ্যানিসিমোভা কোনো সুযোগই পেলেন না ম্যাচে। প্রতিটি সার্ভ, প্রতিটি ব্যাকহ্যান্ড, প্রতিটি গ্রাউন্ডস্ট্রোকে প্রতিপক্ষকে যেন দুমড়ে-মুচড়ে দিচ্ছিলেন। মাত্র ৫৭ মিনিটের লড়াইয়ে একটিও গেম না দিয়েই শিরোপা নিশ্চিত করেন।
শিরোপা হাতে নিয়ে আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সিওনতেক। ম্যাচ শেষে বললেন, “অবিশ্বাস্য অনুভূতি। সত্যি বলতে, উইম্বলডন জেতার স্বপ্নও কোনোদিন দেখিনি। এটা তো আমার কাছে অনেক দূরের ব্যাপার ছিল। যদিও অন্য গ্র্যান্ডস্ল্যাম জেতায় নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস ছিল, তবে উইম্বলডনে এমন কিছু আশা করিনি।”
এই জয়ে সিওনতেকের গ্র্যান্ডস্ল্যাম সংখ্যা দাঁড়ালো ছয়টিতে। আগের চারটি ফ্রেঞ্চ ওপেনে এবং একটি ইউএস ওপেনে। এবার সেই তালিকায় যোগ হলো উইম্বলডন। এখন বাকি আছে কেবল অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। সেই শিরোপা জয়ও হয়তো এখন সময়ের অপেক্ষা।
অন্যদিকে ম্যাচ শেষে অশ্রুসিক্ত অ্যানিসিমোভা দর্শকদের উদ্দেশে বললেন, “আমি চাইছিলাম আপনাদের আরও ভালো কিছু উপহার দিতে। কিন্তু পারিনি।”
দর্শক-ভক্তরা দাঁড়িয়ে করতালি দিয়ে সান্ত্বনা জানালেন তাকে। তবে রাতটা যে একেবারে ইগা সিওনতেকের ছিল, সেটা বুঝিয়ে দিলেন কোর্টের প্রতিটি শটে।