বাংলাদেশের অফস্পিনার সোহেলি আখতার দুর্নীতির অভিযোগে নিষিদ্ধ হওয়া প্রথম নারী ক্রিকেটার হয়েছেন। তিনি দুইটি ওয়ানডে (ODI) এবং ১৩টি টি-টোয়েন্টি (T20I) ম্যাচ খেলেছেন। তাকে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের চেষ্টা, ঘুষের প্রস্তাব এবং আইসিসির অ্যান্টি-করাপশন কোড (ACU)-এর কাছে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ করতে ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি তদন্তে বাধা দেওয়ার জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
সোহেলি আখতার স্বীকার করেছেন যে, তিনি দুর্নীতি-বিরোধী কোডের পাঁচটি বিধান লঙ্ঘন করেছেন। ফলে তাকে পাঁচ বছরের জন্য সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ২০২৩ সালের নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে (যা দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হয়) এক বাংলাদেশি ক্রিকেটারকে করা এক প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে। ৩৬ বছর বয়সী আখতার ওই বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলে ছিলেন না, কারণ তিনি সর্বশেষ ২০২২ সালের অক্টোবরে জাতীয় দলের হয়ে খেলেছিলেন।
এসিউ-র তদন্তের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩-এ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক মেসেঞ্জারে তার এক বাংলাদেশি ক্রিকেটারের সঙ্গে কথোপকথন। ওই দিন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ম্যাচ ছিল। সে ম্যাচে ইচ্ছাকৃতভাবে ‘হিট উইকেট’ হওয়ার জন্য তিনি ঐ ক্রিকেটারকে ২০ লাখ বাংলাদেশি টাকা (প্রায় ১৬,৪০০ মার্কিন ডলার) ঘুষের প্রস্তাব দেন।
প্রস্তাব পাওয়া ক্রিকেটার তৎক্ষণাৎ বিষয়টি এসিউ-কে জানান এবং সোহেলির পাঠানো সমস্ত ভয়েস নোট জমা দেন, যদিও সোহেলি তার ডিভাইস থেকে সেই ফাইলগুলো মুছে ফেলেছিলেন।
এসিউ-র জিজ্ঞাসাবাদে সোহেলি স্বীকার করেন যে তিনি ওই খেলোয়াড়কে ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। তবে প্রথমে তিনি দাবি করেন, “তিনি শুধুমাত্র তার বন্ধুকে দেখানোর জন্য এটি করেছিলেন যে, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা ফিক্সিংয়ে জড়িত নয়, প্রকৃতপক্ষে দুর্নীতির উদ্দেশ্যে কিছু বলেননি।”
তার প্রথম সাক্ষাৎকারে, সোহেলি এসিউ-কে কিছু স্ক্রিনশট দেখান, যা তিনি দাবি করেন তার এবং এক বন্ধুর মধ্যে “একটি চ্যালেঞ্জ” সম্পর্কিত কথোপকথনের অংশ। তিনি বলেন, এই বার্তাগুলো ১৪ ফেব্রুয়ারির আগেই বিনিময় হয়েছিল। কিন্তু এসিউ তদন্ত করে দেখতে পায় যে, মেসেজগুলোর মেটাডাটা পর্যালোচনা করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এগুলো ১৪ ফেব্রুয়ারির পর তৈরি করা হয়েছে।
তার নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ নির্ধারণে আইসিসি বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করেছে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল, “মিস আখতার এমন একটি সমঝোতায় সম্মত হয়েছেন যা শুনানির প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে সময় এবং ব্যয় বাঁচাবে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাবে।”
আইসিসি তাই মনে করে যে, পাঁচ (৫) বছরের জন্য নিষিদ্ধকরণ যুক্তিসঙ্গত এবং যথাযথ। মিস আখতার এই শাস্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। ফলে পাঁচ বছরের জন্য তার ক্রিকেট খেলার অযোগ্যতা কার্যকর করা হয়েছে।
ফলে, এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করার কোনও অধিকার নেই, না সোহেলি আখতারের, না আইসিসির।
এসিউ, যা সকল সিনিয়র আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তদারকি করে, সাধারণত এমন তদন্তের তথ্য প্রকাশ করে না যা আনুষ্ঠানিক অভিযোগের পর্যায়ে পৌঁছায় না। তবে, পূর্বে কিছু নারী ক্রিকেট ইভেন্ট নিয়ে তদন্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, এটি প্রথমবারের মতো কোনও নারী ইভেন্টে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞায় গড়াল
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর সর্বশেষ নিউজ পড়তে ক্লিক করুন: সর্বশেষ
- দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ এর ফেসবুক পেজটি ফলো করুন: dailysabasbd
Leave a Reply