ঢাকার বেইলি রোড এলাকায় মাঝে মাঝে দেখা মেলে এক শিশুর, যার দুই চোখ দুই রঙের—একটি বাদামি, অন্যটি নীল। পথচারীদের দৃষ্টি তখন যেন স্বাভাবিক গতিপথ ভুলে যায়। এমন চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য চিকিৎসাবিজ্ঞানে পরিচিত “হেটারোক্রোমিয়া ইরিডিস” নামে।
হেটারোক্রোমিয়া (Heterochromia iridis) হলো একটি বিরল জেনেটিক বা অধিগত বৈশিষ্ট্য, যার ফলে দু’চোখের আইরিসে ভিন্ন রঙ দেখা যায়। এটি জন্মগত (Congenital) অথবা পরবর্তী জীবনে অর্জিত (Acquired) হতে পারে। জন্মগত হেটারোক্রোমিয়ার পেছনে সাধারণত OCA2, PAX6 বা MITF জিনের পরিবর্তন দায়ী। কখনো কখনো এটি ওয়ার্ডেনবার্গ সিনড্রোম, স্টার্জ-ওয়েবার সিনড্রোম কিংবা হোরনার সিনড্রোমের মতো অবস্থা সম্পর্কেও ইঙ্গিত দিতে পারে।
বিশ্বে প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে আনুমানিক ৬ জনের এই অবস্থা দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রেই এটি শুধুমাত্র এক অপূর্ব বৈশিষ্ট্য হিসেবেই রয়ে যায়, চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না।
চোখের এই বৈচিত্র্য শুধু একটি শারীরিক বৈশিষ্ট্যই নয়, বরং প্রকৃতির এক নিখুঁত সৃষ্টিশৈলীও বটে। এই শহরের কোলাহলে ঘুরে বেড়ানো এমন চোখজোড়া যেন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়—মানবদেহের প্রতিটি রহস্যেই আল্লাহর এক নিখুঁত পরিকল্পনা ও কুদরতের নিদর্শন নিহিত রয়েছে।
photo credit: Ibnat Mahreen Zaman