আন্তর্জাতিক বাজারে শুক্রবার (১১ জুলাই) ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১.৭২ ডলার বা ২.৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭০.৩৬ ডলারে। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই তেলের দাম বেড়ে হয়েছে ৬৮.৪৫ ডলার, যা ১.৮৮ ডলার বা ২.৮ শতাংশ বৃদ্ধি।
জ্বালানি বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্ববাজার এখন সরবরাহ ঘাটতির সংকেত পাচ্ছে। প্রাইস ফিউচারস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক ফিল ফ্লিন বলেন, “সরবরাহ সীমিত—এটি এখন স্পষ্ট।”
এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্রে টানা ১১ সপ্তাহ ধরে তেল ও গ্যাস রিগের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে, যা ২০২০ সালের পর প্রথম। সেই সময় করোনা মহামারির কারণে চাহিদা অনেকটাই কমে গিয়েছিল।
তবে দীর্ঘমেয়াদে তেলের চাহিদা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশ্লেষকরা। আইইএ একদিকে সরবরাহ বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা বললেও, চাহিদা বৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে ধরেছে, যা ভবিষ্যতে উদ্বৃত্ত বাজারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এদিকে ওপেক প্লাস জোটভুক্ত দেশগুলো রাশিয়া ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে উৎপাদন বাড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী আলেক্সান্ডার নভাক জানিয়েছেন, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে অতিরিক্ত উৎপাদনের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সৌদি আরব চীনকে আগস্টে ৫১ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করবে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
তবে ২০২৬ সাল থেকে বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস পেতে পারে বলে ওপেকের ‘ওয়ার্ল্ড অয়েল আউটলুক’ পূর্বাভাস দিয়েছে। চীনের অর্থনৈতিক ধীরগতিকে এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া ভূরাজনৈতিক অস্থিরতাও বাজারে প্রভাব ফেলছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন এবং ইউরোপীয় কমিশন নতুন নিষেধাজ্ঞা প্যাকেজ উত্থাপন করতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বল্পমেয়াদে তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকতে পারে।