।মধ্যপ্রাচ্যে দুই বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসানে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গাজা নিয়ে প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে—যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিতে—ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হয়েছে। ট্রাম্প নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ট্রাম্প তাঁর পোস্টে লিখেছেন, “ইসরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সই করেছে। এর মানে, সব বন্দি খুব শিগগিরই মুক্তি পাবে এবং ইসরায়েল তাদের সেনা নির্ধারিত সীমান্তরেখা পর্যন্ত প্রত্যাহার করবে। এটি হবে এক শক্তিশালী, দীর্ঘস্থায়ী ও স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ।” তিনি আরও জানিয়েছেন, চুক্তি আরব ও মুসলিম বিশ্ব, ইসরায়েল, আশপাশের দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি কাতার, মিশর ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যারা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেছে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলা শুরুর দ্বিতীয় বার্ষিকীর ঠিক একদিন পর মিশরে অনুষ্ঠিত পরোক্ষ আলোচনায় এই সমঝোতা হয়। চুক্তির আওতায় গাজায় যুদ্ধবিরতি, মানবিক সহায়তা প্রবেশ এবং বন্দি বিনিময় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চুক্তি সইয়ের পর ট্রাম্পের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুজনের মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিক ও আবেগঘন আলোচনা হয়েছে। বন্দি মুক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ঐতিহাসিক সাফল্যের জন্য তারা একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।”
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মিশরের শারম আল-শেখে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যার অবসান এবং দখলদার বাহিনীর গাজা থেকে প্রত্যাহারের লক্ষ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছি।” তারা কাতার, মিশর ও তুরস্ককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকেও মূল্যায়ন করেছেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা গাজার সীমানা পেরিয়ে ইসরায়েলি বসতি ও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালানোর মাধ্যমে এই যুদ্ধ শুরু করে। এতে প্রায় ১,২০০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৭০০–এর বেশি সাধারণ নাগরিক। ২৫১ জনকে অপহরণ করা হয়। ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ শিশু। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ২৭ অক্টোবর থেকে ৪৬৬ জন সেনা নিহত ও ২,৯৫১ জন আহত হয়েছেন।