
চাঞ্চল্যকর অভিজিৎ, দীপন ও জুলহাস মান্নান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মোজাম্মেল হোসেইন সাইমনের মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’দের ব্যানারে এ কর্মসূচি আয়োজিত হয়।
মোজাম্মেল হোসেইন সাইমন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১১-১২ সেশনের শিক্ষার্থী। ২০১৭ সালের ৩০ এ সেপ্টেম্বর ঢাকার বাউনিয়া থেকে তার স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানের সামনে সিটিটিসি তাকে অপহরণ এবং গুম করে। টানা ৪৮ দিন গুম রাখার পর ব্লগার হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
শাবিপ্রবিতে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন শাবিপ্রবির কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং(সিএসই) বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মোমিন, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক রাকিবুল হাসান, অভিযুক্ত সাইমনের ভাই আব্দুল্লাহ আল হোসাইন এবং শাবিপ্রবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীবৃন্দ।
সিএসই বিভাগের শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মোমিন বলেন, “সাইমন আমার ডিপার্টমেন্টের ১১-১২ ব্যাচের ছাত্র। শুরু থেকেই আমরা তাকে খুবই মেধাবি হিসেবে পেয়েছি। সে তৃতীয় বর্ষ থেকেই নিজে নিজে সফটওয়্যার ডেপেলাপ করা শুরু করে। তাকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখনই আমরা ধারণা করতে পেরেছিলাম যে তাকে সাজানো মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।”
অভিযুক্ত সাইমনের ভাই আব্দুল্লাহ আল হোসাইন বলেন, ” আমার ভাইকে সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এই মামলার প্রধান সাক্ষী নিজে বলেছে সে ঘটনাস্থলে আমার ভাইকে দেখেনি। আমার ভাইকে বিভিন্ন কঠোর নির্যাতনের মাধ্যমে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিতে চেয়েছে। কিন্তু আমার ভাই অস্বীকৃতি জানানোয় তারা আমাদের প্যারালাইজড বাবাকেও গুম করে। বাবাকে মুক্তি দেওয়ার শর্তে আমার ভাই ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য হন। আমরা প্রশাসনের কাছে কোন এক্সট্রা ফেভার চাই না। আমরা শুধু চাই আমাদের ভাইয়ের মামলা যেন দ্রুততার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করা হয় এবং তার ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়।”
গণিত বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, “সরকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিলেও সাইমনের কোন পলিটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড না থাকায় তাকে মুক্তি দেয়নি। আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, আমাদের ভাই সাইমনকে যদি দ্রুত মুক্তি দেওয়া না হয় তাহলে আমরা সবাই ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করবো।”
এছাড়া মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন আইপিই ডিপার্টমেন্টের পলাশ বখতিয়ার, বিবিএ ডিপার্টমেন্টের মাহবুবুল ইসলাম পবন, সোশ্যালজির আজাদ শিকদার এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের।