ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন যোগ দিলেন বিজিবিতে - দৈনিক সাবাস বাংলাদেশ
নোটিশ:
শিরোনামঃ
জাবিতে প্রাণ রসায়ন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র‍্যাগিং বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাবের নতুন কমিটি ঘোষণা বিদেশে নতুন আগত বাংলাদেশিদের প্রতি অমানবিক আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ফজলে এলাহী সাবেক সেনাকর্মকর্তার জবানিতে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর প্রকৃত চিত্র কাতার–সৌদি মধ্যস্থতায় পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত ‘আপাতত স্থগিত’ করল আফগানিস্তান পাকিস্তান আবারও আফগান সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করলে আফগান বাহিনী জবাব দিতে সম্পূর্ণ প্রস্তুত বালিয়াকান্দিতে টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ক্লাস করতে এসে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতা আটক কুবির তিন শিক্ষার্থী নোবিপ্রবি মডেল ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্সে পুরস্কার জয়ী রাজবাড়ীর কালুখালীর গুণী সংগীতশিল্পী জাহিদ হাসানের মৃত্যু

ফেলানীর ভাই আরফান হোসেন যোগ দিলেন বিজিবিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ৬২ বার দেখা হয়েছে

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-তে যোগ দিয়ে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের সংগ্রামে নতুন অধ্যায় শুরু করলেন আরফান

ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেনের বিজিবিতে যোগদান একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা সীমান্ত হত্যার দীর্ঘ ইতিহাসে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভারতের কুচবিহার সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করে আসছে। এখন, ফেলানীর ছোট ভাই আরফান হোসেনের বিজিবিতে যোগদান সেই লড়াইয়ের একটি নতুন অধ্যায়।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি লালমনিরহাট ব্যাটালিয়ন (১৫ বিজিবি) আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন আরফান। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর আবেগাপ্লুত কণ্ঠে আরফান বলেন, “বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল দেশের জন্য কাজ করবো। ফেলানী হত্যার পর মানুষের প্রতিবাদ আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে বিজিবিতে যোগ দিতে। আজ সেই স্বপ্ন পূরণ হলো। বিজিবিকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে দেশের সেবা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য।”

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, “ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রেখেছিল বিএসএফ। সেই দৃশ্য এখনো ভুলতে পারিনি। তবে দেশবাসী ও বিজিবি সবসময় আমাদের পাশে ছিল। দোকান করে দিয়ে সহায়তাও করেছে। আজ আমার ছেলে নিজ যোগ্যতায় বিজিবিতে চাকরি পেলো, এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।”

লালমনিরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, “বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। তার ছোট ভাই নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে যোগ দেবে। আমরা আশা করি, তিনি দক্ষ সদস্য হয়ে দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।”

ফেলানী হত্যার ১৪ বছর, বিচার দেখে মরতে চান বাবা-মা

ফেলানী হত্যার পর তার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই করে আসছে। ২০১৩ সালে বিএসএফ কনস্টেবল অমিয়া ঘোষকে অভিযুক্ত করা হলেও, বিচারিক প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রিতা ও অস্বচ্ছতার কারণে ন্যায়বিচার পাওয়া যায়নি। ফেলানীর পরিবার এখনও ভারতের সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে ন্যায়বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে।

ফেলানীর ছোট ভাই আরফান হোসেনের বিজিবিতে যোগদান শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, বরং পুরো জাতির জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত। এটি সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা, যা বলে দেয় যে, ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই কখনো বৃথা যায় না। ফেলানীর আত্মত্যাগ এবং তার পরিবারের অবিচল সংগ্রাম আমাদের সকলকে অনুপ্রাণিত করে।

ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই এখনও চলছে, এবং তার ছোট ভাই আরফান হোসেনের বিজিবিতে যোগদান সেই লড়াইয়ের একটি নতুন অধ্যায়। এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের জন্য সংগ্রাম কখনো থেমে থাকে না, এবং একদিন তা অবশ্যই সফল হবে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.

এই ধরনের আরও নিউজ

© কপিরাইট ২০২৪-২০২৫ | সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: NagorikIT